প্রতীকী
সুব্রত বিশ্বাস: দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন শেষ হওয়ার অনেক আগেই করোনা হটস্পট এলাকায় রেলের দপ্তরগুলিতে কর্মীদের কাজে ডেকে পাঠানোয় ক্ষুব্ধ কর্মী সংগঠন। সোমবার হাওড়া ডিভিশনের সদর কার্যালয়ে হাজিরা ছিল ২৬ শতাংশ। মঙ্গলবার বেশ কিছু কর্মী আসেন অফিসগুলিতে।
এই বিষয়ে হাওড়ার ডিআরএম ইশাক খান বলেন, “যাতায়াতের সুবিধা আছে, বয়স কম ও স্বাস্থ্য ভাল এমন কর্মীদের কাজে আসতে বলার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো হাজির হচ্ছেন কর্মীরা। তবে কোনও ক্ষেত্রে হাজিরা ৩৩ শতাংশের বেশি যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে।” এদিকে, যেহেতু হাওড়া ঘোষিত করোনা হটস্পট, ফলে রেলের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মেনস ইউনিয়ন। তারা এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। হাওড়ায় কিছু সংখ্যক কর্মী এলেও শিয়ালদহ সদর কার্যালয়ে কোনও কর্মী উপস্থিত হননি এই দু’দিন। একমাত্র ব্রাঞ্চ অফিসাররাই হাজির হচ্ছেন। লকডাউন চলাকালীন শিয়ালদহতে এমন অনুপস্থিতি থাকবে বলে অফিসারদের মত। পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের সদর কার্যালায়গুলিতে হাজিরার সংখ্যা দু’দিন ধরেই একেবারে নগন্য। তবে খড়গপুর ডিভিশনে সোমবার ১০ থেকে ২০ শতাংশ হাজিরা ছিল বিভিন্ন বিভাগে। সামাজিক দূরত্ব কর্মীদের মধ্যে না থাকায় হাওড়া ইলেকট্রিক শেডের কর্মীদের লাঠি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় হাওড়া সিটি পুলিশ। এই প্রেক্ষিতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে কর্মী সংগঠনগুলি। পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সধারন সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, রেল বোর্ডের নির্দেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, হটস্পট এলাকাগুলির কর্মীদের কাজে আসতে বলা যাবে না। কলকাতা ও হাওড়া হটস্পট, এছাড়া উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়াও প্রভাবিত। ফলে ওই অঞ্চলে রেল সদর, বিভাগীয় সদর ও ওয়ার্কশপগুলিতে কাজ করতে আসা কর্মীরা নিরাপদে থাকবেন না। ইউনিয়নের দাবীর পর হাওড়াতে কর্মীদের ডেকে পাঠানোয় চরম ক্ষুব্ধ অমিত ঘোষ বলেন, হাওড়ার সিনিয়র ডিপিও মোবাইলে কর্মীদের ডেকে পাঠাচ্ছেন। বিপদ হলে কে দায় সামলাবে?
লিলুয়ায়, কাঁচড়াপাড়া ওয়ার্কশপে এদিন কর্মীরা হাজির হননি। পণ্য পরিবহনের জন্য রেল মালগাড়ি ও পার্সেল ভ্যান চালাচ্ছে। ফলে অপারেশন, সিগন্যাল সঙ্গে যুক্ত বিভাগের বহু কর্মী কাজ করছেন। এই অবস্থায় সোমবার থেকে বোর্ড ৩৩ শতাংশ কর্মী কাজে লাগাতে বলায় বিভিন্ন রেল বিভিন্ন মত পোষণ শুরু করে দিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, বাধ্যতামূলক কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যার সুবিধা আছে তিনি চাইলে কাজে আসতে পারেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল দু’টি গ্রুপ করে একদন অন্তর কাজ করছিল সে ভাবেই চলে এদিন। পূর্বরেল হাজির হতে বললেও, এদিন কর্মীদের যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা করেনি। এর মধ্যে হাওড়া হটস্পট বলে চিহ্নিত হওয়ার পর কর্মীদের হাজির হতে বলায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়। ডিআরএম বলেন, ৩৩ শতাংশের বেশি হাজিরা হবে না। কাজ করতে হবে সপ্তাহে দু’দিন। শুধু অফিসকর্মী, কিছু শেডকর্মী কে কাজে ডাকা হচ্ছে। হাওড়া হটস্পট জোন হলেও তিনি জানান, জেলার এডিএম-এর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, হাওড়া ‘কন্টেনমেন্ট’ জোন নয়। তাই সেখানে কাজে আসাতে বিধিনিষেধ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.