সুব্রত বিশ্বাস: প্রবল শ্বাসকষ্টে মৃত্যু হল পূর্ব রেলের সিনিয়র পার্সোনাল অফিসারের (সিগন্যাল এন্ড টেলিকম)। রবিবার বিআর সিং হাসপাতালে এই মৃত্যুর পর রেলের বিরুদ্ধে চিকিৎসা ব্যবস্থায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছে কর্মী সংগঠন। রবিবার দুপুরে থেকে প্রিন্সিপাল চিফ মেডিক্যাল ডিরেক্টরের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়ন। হাসপাতাল থেকে শিয়ালদহ স্টেশন, সদর দপ্তরের দেওয়ালে অপসারণের দাবিতে পোস্টার দিয়েছেন কর্মীরা।
দিন দশেক আগে প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে করোনা সন্দেহে আধিকারিক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তাঁর COVID টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাঁকে বিআর সিং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রবিবার বেলার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরই মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ অভিযোগ করেন, শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলেও, তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়নি, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলা হয়েছে। যদিও হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ ডি সি ভুঁইয়া ‘সংবাদ প্রতিদিন’ কে জানিয়েছেন, গৌতমবাবুর মৃত্যুর কারণ নিউমোনিয়া। বিআর সিং হাসপাতালে রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা রয়েছে। এর থেকে ভালো চিকিৎসা অন্য কোথাও হতো না বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে, শনিবার গভীর রাতে হাওড়া অর্থোপেডিক হাসপাতালে মারা যান চিৎপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ব্ল্যাক স্মিথ রাজকুমার চৌধুরি। এই মৃত্যুতেও রেলের স্বাস্থ্য বিভাগের চূড়ান্ত গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে কর্মী সংগঠন। জানা গিয়েছে, ১৯ জুন শ্বাসকষ্ট শুরু হয় রাজকুমারের। ২৩ জুন COVID পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পর ২৪ জুন অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভরতি হন। পরে রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় তাঁকে ৩ জুলাই ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়ার পর শ্বাসকষ্ট আবার বাড়তে থাকায় তিনি অর্থোপেডিক হাপাতালে গেলে তাঁকে রিপোর্ট নেগেটিভ বলে বিআর সিং হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে আবার ফেরত পাঠানো হয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে। শনিবার রাতে অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তির পরপরই তাঁর মৃত্যু হয়।
মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ তীব্র অভিযোগ করে বলেন, দুই হাসপাতালের টানাপড়েনে চিকিৎসা না হওয়ায় মৃত্যু হয়েছে রাজকুমারের। গাফিলতি নিয়ে তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা। বিআর সিং হাসপাতালের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আগেই সরব হয়েছেন চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীর। তাঁদের অভিযোগ, সন্দেহজনক COVID রোগীকে আইটিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করতে বাধ্য করছে কর্মীদের। তাতে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ছে। অভিযোগ গ্রাহ্য করছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, বিকল্প ব্যবস্থা না করেই এক চিকিৎসক ও তিন কর্মীকে দিনকয়েক আগে জামালপুরে বদলি করা হয়। কোনও কারণ ছাড়াই এই বদলিতেও ক্ষোভ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তাদের উদাসীনতার অভিযোগে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কর্মী সংগঠন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.