স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি : বাংলায় আটকে পড়া রেল প্রকল্পগুলির ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তার খানিক আভাস মিলেছে কেন্দ্রীয় বাজেটে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার জন্য বহু রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। তার মধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ এখনও পর্যন্ত ঝুলে রয়েছে। তার কারণ সেই প্রকল্পগুলিতে এতদিন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ হয়নি। এবার বাজেটে অবশ্য রাজ্যের বেশ কিছু চালু প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে। তাতে যে রাজ্যের আটকে পড়া সমস্ত রেল প্রকল্পের সমস্যা মিটবে এমনটা বলার অবকাশ নেই। কিন্তু, পূর্ব রেলের জন্য এবারের বাজেটে যে ২,২৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে তাতে আটকে পড়া রেল প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে সুবিধা মিলবে বলেই মত বিশেষজ্ঞমহলের।
পুরনো প্রকল্পগুলিতে বরাদ্দ বৃদ্ধি হলেও এবার নতুন রেললাইন ও ডবল লাইনের ক্ষেত্রে বরাদ্দ তুলনামূলক কমই। রেলের পাশাপাশি রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলিতে কমবেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। মেট্রো প্রকল্পে কোথাও বরাদ্দ বেশি হলেও, কোথাও কমেছে। অনেক ক্ষেত্রে বরাদ্দ শূন্য, আবার কোথাও মাত্র এক হাজার টাকা। নতুন কাজে প্রায় বরাদ্দ নেই। বরানগর থেকে বারাকপুর ভায়া দক্ষিণেশ্বর লাইনে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ১৪.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রো প্রকল্পের জন্য গত বছর বরাদ্দ ছিল ১ কোটি টাকা। সেই জায়গায় এই বছর বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে নোয়াপাড়া-বারাসাত লাইনে বরাদ্দ অনেকটাই কমানো হয়েছে। গত বছর এই ১৮ কিলোমিটার মেট্রো লাইনে বরাদ্দ ছিল ৩০৮.৪১ কোটি টাকা। সেই জায়গায় এবছর বরাদ্দ হয়েছে ২০০ কোটি টাকা। বরাদ্দ কমেছে দমদম এয়ারপোর্ট ভায়া রাজারহাট নিউ গড়িয়া রুটের মেট্রোতে। ৩২ কিলোমিটার এই লাইনে গত বছর বরাদ্দ ছিল ৪৪৯ কোটি টাকা। তার পরিবর্তে বরাদ্দ কমে হয়েছে ৩২৮ কোটি টাকা। সেন্ট্রাল পার্ক থেকে হলদিরাম পর্যন্ত মেট্রো রেল প্রকল্পের জন্য দেওয়া হয়েছে মাত্র ১ কোটি টাকা। কিন্তু জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো লাইনে বরাদ্দ বেড়েছে অনেকটাই। ওই প্রকল্পে গত বছর বরাদ্দ ছিল ৪৩ কোটি টাকা। সেই জায়গায় এবার বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ৯৯ কোটি টাকা। কলকাতা চক্ররেলেও এবার বরাদ্দ হয়েছে ১ কোটি টাকা। গতবারে কোন বরাদ্দ ছিল না চক্র রেলে। নতুন প্রকল্পে কোনও বরাদ্দ নেই এবারের বাজেটেও।
রেল প্রকল্পগুলির মধ্যে আজিমগঞ্জ-মুর্শিদাবাদ লাইনে জিয়াগঞ্জের কাছে ভাগীরথী নদীর উপর রেল ব্রিজ ও লাইনের জন্য এবার বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ১ হাজার টাকা। আবার লালগোলা-জিয়াগঞ্জ লাইনে ডবল লাইনেও বরাদ্দ কমেছে এবার। গত বার এই লাইনে বরাদ্দ ছিল চার কোটি, যা কমে হয়েছে ১ কোটি। ডবল লাইনের কাজেও বরাদ্দ খুব বেশি হয়নি বাজেটে। পাশাপাশি, তারকেশ্বর থেকে রেল লাইন সম্প্রসারণ করে গোঘাট পর্যন্ত ট্রেন চলেছে। তা বিষ্ণুপুর পর্যন্ত যাওয়ার কথা। সেই প্রকল্পের বরাদ্দ এবার শূন্য। ভবাদিঘির জমিজটের জন্য কাজ আটকে রয়েছে। এবারে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ক্ষেত্রে ১৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ভারতীয় রেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.