সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিগেডের সমাবেশের সাফল্য কামনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী। বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিলেন রাহুল। তৃণমূল নেত্রীকে ‘মমতা দি’ সম্বোধন করে তিনি লিখেছেন, “আমাদের বিশ্বাস আছে, গণতন্ত্র রক্ষায় একজোট হযেছে বিরোধীরা। গণতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলে দেশের উন্নয়ন হবে। মোদি সরকার এগুলো ধ্বংস করতে চাইছে। বাংলা সবসময় পথ দেখায়। ইতিহাস বলছে, বাংলার মহান জনগণ বরাবর আমাদের আদর্শরক্ষার লড়াইয়ে একদম প্রথম সারিতে থাকেন।” বিজেপি সরকারের সমালোচনাও আছে চিঠিতে।
ব্রিগেডে সোনিয়া গান্ধীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা। সোনিয়ার শরীর খুব একটা ভাল নয়। লোকসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে আসছেন। তার আগে রাহুলের বার্তা বিরোধী জোট রাজনীতির পক্ষে ইতিবাচক বলেই মনে করা হচ্ছে। রাহুল লিখেছেন, “ব্রিগেডের সমাবেশ ‘ইউনাইটেড র্যালি’ জোরালো বার্তা দেবে ঐক্যবদ্ধ ভারতের। মমতাদি-কে সমর্থন করি। মোদি সরকারের মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ক্ষুব্ধ দেশবাসী। ভারতজুড়ে ক্রোধ হতাশার বহিঃপ্রকাশ।”
ব্রিগেডমুখী গোটা বাংলা। রাত পোহালেই বিজেপি বিরোধী জোটের সমাবেশ। ভিন রাজ্য থেকেও আসছেন মানুষ। তৃণমূল নেতৃত্ব মনে করছেন, ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেডে ৫০ লক্ষ জনসমাগম পেরিয়ে যাবে। সর্বকালের সেরা ব্রিগেড সমাবেশ হবে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সকালের মধ্যেই চার লক্ষ মানুষ শহরে সমাবেশে যোগ দিতে চলে এসেছেন। গতকাল থেকেই উত্তরপ্রান্তের মানুষ কলকাতায় আসা শুরু করে। মানুষের ঢল নামায় মাইকের সংখ্যা এক হাজার থেকে বাড়িয়ে দেড় হাজার করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিতে উত্তরবঙ্গের ট্রেন শিয়ালদহ, হাওড়ায় নামতেই হাজার হাজার মানুষ আলাদাভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে চলে যান। কিছু মানুষ আবার চলে যান স্টেশন চত্বরে থাকা বুথ ক্যাম্পে। সেখানেই স্বেচ্ছাসেবকরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন কোথায় যেতে হবে। ব্রিগেডের এক দিন আগেই ভরে গিয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্র। কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, উত্তীর্ণ, সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মশালায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সব জায়গায় খাওয়ার বন্দোবস্তও রয়েছে। বিনয় তামাং, অনীত থাপারাও চলে আসছেন এদিন। অন্য সব দিনের তুলনায় হাওড়া, শিয়ালদহ অন্যরকম চেহারা নিয়েছে। ভিড়ে থাকা মানুষগুলোর হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা। বিকেলের মধ্যে জঙ্গলমহল-সহ মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ চলে আসবেন বলে তৃণমূলের নেতৃত্বরা জানিয়েছেন।
কোন জেলা থেকে কত মানুষ আসবেন, তা নিয়ে জেলার নেতৃত্বের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতাও আছে। নন্দীগ্রাম, লালগড় ও নেতাইয়ের মানুষ এসে পড়বেন বিকেলে। ওই সব এলাকার মানুষ রাজনৈতিক ভাবাবেগে কিছুটা উত্তেজিত। এদিকে, দক্ষিণ দিনাজপুরের কর্মীরা অনেকেই আছেন সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে। উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কোচবিহার থেকে লোক নিয়ে এসেছেন। তদারকি করছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এদিকে, মূলমঞ্চ সহ পাঁচ মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। দুই মঞ্চ নেতা-মন্ত্রী ও বিধায়ক-সাংসদদের জন্য করা হয়েছে। ব্রিগেডে আঁটসাট নিরাপত্তা করা হয়েছে। ভিক্টোরিয়া, কুইন্সওয়েতে নো পার্কিং জোন। খিদিরপুর, পার্ক সার্কাস থেকে অন্য মিছিল জড়ো হবে ব্রিগেডে। মোট সাতটি পয়েন্ট থেকে মিছিল রওনা হবে।
শনিবার ব্রিগেড সমাবেশের নিরাপত্তায় থাকছে ৮ হাজার পুলিশ। ৩৫ ফুট উচ্চতার ৮টি ওয়াচ টাওয়ার। শহরজুড়ে থাকবে ১৫টি বিপর্যয় মোকাবিলা দল। ১০টি কুইক রেসপন্স টিম ও ১৫ অ্যাম্বুলেন্স। কাল ভোর চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত সব পণ্যবাহী গাড়ি নিষিদ্ধ। মূল পাঁচ মঞ্চের পাহারায় থাকবে কম্যান্ডো বাহিনী। পানীয় জলের জন্য বিভিন্ন জায়গায় পুরসভার ২০০টি জলের ট্যাঙ্ক। থাকছে শতাধিক বায়ো টয়লেট। বন্ধ থাকছে ক্যাথিড্রাল রোড, এজেসি বোস রোড, হসপিটাল রোড, কুইন্স ওয়ে, লাভার্স লেনে যান চলাচল। প্রয়োজনমতো অন্য রাস্তাতেও যান চলাচল হয় বন্ধ করে দেওয়া হবে। নয়তো ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বিভিন্ন গাড়ির মুখ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.