কৃষ্ণকুমার দাস: এবার কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা নিয়ে তুলকালাম বাঁধল খাস কলকাতায়। তিলজলা সি এন রায় রোডে একটি বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। বৃহস্পতিবার সেই বাড়িটির অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো তৈরি করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন পুরকর্তারা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের আটকে বিক্ষোভ দেখান। শেষপর্যন্ত মেয়রের ফোন পেয়ে আটক কর্তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। প্রসঙ্গত, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি করা নিয়ে একাধিক জেলায় অশান্তি হয়েছে। আসানসোলে তো ওসির পা ভেঙে দেওয়া হয়। এবার কলকাতায় সেই বিক্ষোভ দানা বাঁধল।
কলকাতা পুরসভার ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। যেখানে করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকজনকে ১৪ দিনের আইসোলেশনে রাখা হবে।স্থানীয় কাউন্সিলর তথা মন্ত্রী জাভেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ আহমেদ খানের উপস্থিতিতেই বাড়িটি নির্বাচন করা হয়েছিল বলে খবর। এদিন পুরসভার একটি বিভাগের ডিজি ও আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট বাড়িটিতে যান। অভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো দেখে ৪০ জনকে সেখানে রাখা হত বলে খবর। স্থানীয় বাসিন্দাদের কানে এই খবর যেতে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সাফ জানিয়ে দেন, “সেখানো কোনও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করা যাবে না।” তাঁদের অভিযোগ, “তিলজলার এই অংশ এমনিতেই ঘনবসতিপূর্ণ। এখানে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে।” সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কাউন্সিলরের কয়েকজন অনুগামীও ছিলেন। পুরকর্তারা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি। বরং তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ চলতে থাকে। উপায় না পেয়ে থানায় ফোন করেন তাঁরা। কিন্তু পুলিশ আসেনি বলেই অভিযোগ। এরপর সোজা মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করেন পুরকর্তারা। তিনি সিপি অনুজ শর্মাকে ফোন করতেই বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে তাঁদের উদ্ধার করে। কিন্তু ওই ৪০ জনকে এখন কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পুরসভা।
এ প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “এলাকার কাউন্সিলর ও পুরকর্তারা এলাকার মানুষকে বোঝাবেন। ওখানে কোনও রোগীকে রাখা হবে না। বরং তাঁর সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাঁদের আলাদা রাখা হবে।” তবে তিনি এও জানিয়েছেন, প্রশাসন চাইলেই যে কোনও এলাকায় কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করতে পারে। এখন রাজ্যে মহামারি আইন কার্যকরা করা হয়েছে। ফলে কেউ সরকারি কাজে বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, এনিয়ে শুক্রবার পুরভবনে বৈঠক ডেকেছেন মেয়র। এদিনের ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে স্থানীয় কাউন্সিলর ফৈয়াজ আহমেদ খানকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.