পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন কাশী বোস লেনের পুজো প্রস্তুতি৷
সরোজ দরবার: বাঙালির দুর্গাপুজো কীভাবে আসে? শিউলি ফুটুক আর শরতের আকাশ যতই সেজে উঠুক না কেন, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ না হলে পুজো যেন আসেই না। ওই শব্দেই বাঙালির পুজোর সুর বাঁধা। আবার পুজো মানেই শঙ্খ-ধ্বনি থেকে নানা আওয়াজ। ঢাক-ঘণ্টা বেজে উঠলেই আমরা বুঝতে পারি, আরতি শুরু হয়েছে। অর্থাৎ পুজোর নির্দিষ্ট আবহ আছে। সেগুলো না হলে পুজো যেন ফাঁকা ফাঁকা। সম্পূর্ণ হয় না। এবার এই আবহকে থিম করেই পুজো কাশী বোস লেনে।
[ প্রতিবন্ধকতাকে দূরে ঠেলে উৎসবে মাতবে ওরাও, পুজোয় চমক নলিন সরকার স্ট্রিটের ]
কাশী বোস লেন মানে ঐতিহ্য-অভিনবত্ব ও তরুণের উত্তেজনা। উত্তর মানেই কাশী বোস লেন-এই সমীকরণেই বিশ্বাস করেন উদ্যোক্তারা। ফলত প্রতিবার নতুন কাজে চমকে দেওয়ারও একটা প্রয়াস থাকে। এবার তাদের থিম ভাবনা-আবহ। থিমের ঘনঘটা যেদিন থেকে বাঙালির পুজো মণ্ডপে ঢুকে পড়েছে, সেদিন থেকেই মামানসই আবহও তৈরি করা শুরু হয়েছে। এখন তো তা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতাও হয়। কিন্তু এবারের কাশী বোস লেনে আবহ থিমের সঙ্গী নয়। আবহ নিজেই থিম। এ ভাবনা শিল্পী প্রদীপ দাসের। কাশী বোস লেনের পুজোর সঙ্গে তাঁর নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনিই এবার নতুন ভাবনায় সাজিয়ে তুলেছেন এই পুজোকে। আবহ মানে এখানে শুধু সুর, শব্দ ও বাদ্যযন্ত্র নয়। এই উত্তর কলকাতার একটা নির্দিষ্ট আবহ আছে। একটা আলাদা টাচ আছে। যা দক্ষিণ বা অন্য কোনও এলাকা থেকে আলাদা করে দেয়। শিল্পীর আবহ ভাবনায় উঠে এসেছে সেগুলিই। বাদ্যযন্ত্রের কিছু কিছু ছোঁয়া এসেছে। রং উঠে এসেছে বিবর্তনর কথা মনে রেখেই। কিংবা রঙবদলের এই সময়কেও হয়তো প্রতিভাত করে। সেই সঙ্গে হয়তো জাফরির ব্যবহার মনে করিয়ে দেবে, উত্তর কলকাতা ছাড়া এ জিনিস অন্য কোথাও থাকতে পারে না। কিংবা পুরনো রেডিও যেগুলি রাখা আছে, তাতে চোখে পড়লে সেই মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানের কথাও স্মৃতিতে ভেসে উঠবে। কোথাও বা মনে হবে যেন কনসার্ট বসেছে। চমক অবশ্য আরও আছে। আস্তিনের সব তাস এখনই প্রকাশ করতে নারাজ শিল্পী। তবে যেটুকু দেখা যাচ্ছে তাতে আবহের চমকে দর্শক যে মুগ্ধ হবেন এমনটা বলাই যায়। আর আবহের আবহ সৃজনে কবিতা কানেকশন। আর এই ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই প্রতিমা গড়ছেন শিল্পী পিন্টু শিকদার।
[ এবার পুজোয় মাঝি-মাল্লাদের সংগ্রামের কাহিনি বলবে দমদম তরুণ দল ]
থিম, থিম সংয়ের বাইরেও কাশী বোস লেনের পুজো মানে এক অন্য আন্তরিকতা। সাধারণ মানুষের জন্য এখানে ৫৬ ভোগের বন্দোবস্ত করা হয়। দেশের সব রাজ্যের খাবার দিয়েই তৈরি হয় এই ভোগ। ভোগে যেমন সীমানা অতিক্রম করে মেলামেশা, ভোগ বিতরণেও তেমন সকলের পাশে সকলে। বারোয়ারি হয়েও এ পুজো অনেকের কাছে বাড়ির বেশি। সেটাই পুজোর ইউএসপি। আর দর্শনার্থীদের মনে থেকে যায় তাঁদের অভিনব ভাবনা। এবারও সেই চমকেই সকলকে মাতাতে তৈরি কাশী বোস লেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.