স্টাফ রিপোর্টার: সাঁতার পোশাক পরেছিলেন নোবেলজয়ী পদার্থবিদ। তাঁর বইও কি নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়?(St.Xaviers University) অভিযোগ, স্রেফ সাঁতারের পোশাক পরার জন্য ইংরেজির অধ্যাপিকাকে বরখাস্ত করেছেন জেসুইটরা! কস্টিউম কাণ্ডে তাই উপচে পড়ছে মিমের বন্যা। সে তালিকায় বাচিক শিল্পী থেকে শুরু করে সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী কিম্বা অভিনেত্রী, রয়েছেন সকলেই। বলছেন, শুধুমাত্র সাঁতারের পোশাক পরে ছবি দেওয়ার জন্য ইংরেজির অধ্যাপককে (Professor) বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত লজ্জাজনক।
প্রশ্ন উঠছে বছর ত্রিশের ওই মহিলার জায়গায়, কোনও পুরুষ যদি খালি গায়ে ছবি দিতেন। এমনই সিদ্ধান্ত নিত তো সেন্ট জেভিয়ার্স? সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এমনই এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে উন্মুক্ত বুকে সমুদ্রতীরে রিচার্ড ফেইনম্যান। নোবেলজয়ী পদার্থবিদের শরীরে স্রেফ একটুকরো সাঁতার পোশাক। প্রাক্তনীরা প্রশ্ন ছুড়েছেন, এবার কি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার থেকে ফেইনম্যানের পদার্থবিদ্যার বই সরিয়ে দেওয়া হবে?
জেভিয়ার্সের ভাইস চ্যান্সেলর ডা. জে ফেলিক্স রাজকে সমুদ্রের ধারে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাচিকশিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ওই অধ্যাপিকাকে তাড়িয়ে ফাদার প্রমাণ দিয়েছেন, বোধ শিক্ষার থেকেও শরীর অনেক দামি। সুজয়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও অনেকটা একইরকম। “যৌনতা বিষয়ক সেমিনার করার অপরাধে এক নামী বিজনেস স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল আমাকে। সেদিন অপরাধ বুঝতে পারিনি। এখন বুঝছি, সেন্ট জেভিয়ার্সের ফাদারের মতোই কিছু মানুষ আমার যাপন নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন।”- বলেছেন সুজয়।
ডা. জে ফেলিক্স রাজকে তাঁর প্রশ্ন, কোন নীতিবলে, যিনি সুইমিং কস্টিউম পরেন তিনি ক্লাসরুমে শিক্ষাদান করতে অপটু? ফাদারকে সমুদ্রের সান্নিধ্যে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পী। বলেছেন, “মানুষ হয়ে উঠতে একবার সাগরপাড়ে যান। আপনারও ইচ্ছে করবে পবিত্র শ্বেতবস্ত্র ছেড়ে সমুদ্রকে আলিঙ্গন করতে।” অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র আবার বেজায় খুশি এহেন এলিট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করে। মা-বাবাকে ধন্যবাদ জানিয়ে কাঞ্চনার বক্তব্য, “ভাগ্যিস বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনা করেছি। সেখানে সুইমিং কস্টিউম পরলেও কেউ টিটকিরি দেয়নি। সমাজের নানা ক্ষেত্রে দেখেছি জেভিয়ার্সের প্রাক্তনীরা অদ্ভুত উন্নাসিকতায় ভোগেন। তাঁরাও এবার দেখুন প্রদীপের নিচে কত অন্ধকার।” তবে সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনী ছন্দক গুহ অবাক হচ্ছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের এহেন ব্যবহারে। তাঁর কথায়, “নিজে পড়েছি বলেই বলছি। এদের মানবিকতা শূন্য। টাকা ছাড়া কর্তৃপক্ষ এখানে কিছুই চেনে না। যাঁরা ফেস্টে না খাটলে ডিগ্রি দেয় না তাঁদের কাছে এহেন ব্যবহারই প্রত্যাশিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.