রাহুল রায়: ববিতা সরকারের পর এবার প্রিয়াঙ্কা সাউ। এসএসসি-তে (SSC) যোগ্যতা প্রমাণ সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়ার বঞ্চনা দূর করে হাই কোর্টের নির্দেশে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পেলেন তিনি। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের (Calcutta HC) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, যোগ্য প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা সাউকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে চাকরির নিয়োগপত্র দিতে হবে। তার আগে ১১ থেকে ২১ অক্টোবরের মধ্যে কাউন্সেলিং (Counselling) সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উচ্চ আদালতের নির্দেশের ফলে প্রিয়াঙ্কা সাউ নিজের বাড়ির কাছের যে কোনও একটি স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দিতে পারবেন পুজোর পরই। সুখবর পেয়ে প্রিয়াঙ্কা খুশি হলেও আবেগে ভেসে যাননি। বরং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এতদিনকার আন্দোলন সফল হওয়ার কৃতিত্ব তিনি দিচ্ছেন আদালতকেই।
অঙ্কিতা অধিকারী বনাম ববিতা সরকার। এসএসসিতে যোগ্য প্রার্থীর চাকরি পাওয়া নিয়ে ববিতা সরকারের আইনি লড়াই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মন্ত্রীকন্যার চাকরি বাতিল হয়ে মেখলিগঞ্জের ওই স্কুলে ওই পদেই চাকরি পেয়েছেন ববিতা। শুধু তাই নয়, যেদিন থেকে তাঁর চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল, শুধুমাত্র বঞ্চনার কারণে তা হয়নি, সেই দিন থেকেই ববিতার বকেয়া বেতন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। ইতিমধ্যে অবশ্য সেই টাকা পেয়ে গিয়েছেন তিনি।
ববিতার সেই মামলার সঙ্গে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন আরও ২০ জন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের সকলেরই একই অভিযোগ। এসএসসি-তে কম নম্বর পেয়েও অন্যরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন। সেই ২০ জনের মধ্যে একজন প্রিয়াঙ্কা সাউ। মেধাতালিকায় বেশি নম্বর পেয়েও চাকরির নিয়োগপত্র হাতে পাননি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের দাবি, ২০১৭ মেধাতালিকা অনুযায়ী মূলত মহিলা ক্যাটেগরিতে ইন্টারভিউ (Interview) নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর নম্বরের থেকে অন্যদের নম্বর বেশি থাকায় প্রিয়াঙ্কাকে চাকরি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁকে ওয়েটিং লিস্টে রাখা হয়েছিল।
তবে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, যোগ্য প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা সাউ। তাঁকে বাড়ির কাছের তিনটি স্কুলের মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। কমিশনকে এই মর্মে নির্দেশ দেন বিচারপতি। এ নিয়ে প্রিয়াঙ্কার প্রতিক্রিয়া, ”আন্দোলন করেও যখন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছিল না, তখন আদালতের দ্বারস্থ হই। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে মামলা করি। ২০১৭ সালে পরীক্ষার পর ইন্টারভিউয়ের ডাক পাই। তবে আমার চেয়ে কম নম্বর পেয়ে একজন চাকরিতে যোগ দেয়, আমি দিতে পারিনি। সেই অভিযোগেই মামলা করি। আদালতের নির্দেশে চাকরি পেয়ে খুব ভাল লাগছে। আদালতের উপর বরাবর ভরসা ছিল, এখনও আছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.