নব্যেন্দু হাজরা: কথা ছিল পুরনো ভাড়াতেই পথে নামবে বাস-মিনিবাস। কিন্তু, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল উলটোটা। বৃহস্পতিবার যে সমস্ত রুটে বেসরকারি বাস নেমেছে, যাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে যেমন খুশি ভাড়া। কোনও রুটে বাসে পা দিলেই দিতে হয়েছে ১০ টাকা, কোথাও আবার কিছুটা দূরে গেলেই ১৫ অথবা ২০। ফলে বিভিন্ন রুটে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চলেছে বচসা। সরকারি নির্দেশ ছাড়া এভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগে হাওড়া, শিয়ালদহ-সহ একাধিক জায়গায় বাসের বিরুদ্ধে কেস করেছে পুলিশ। তবে এসবের মাঝেও প্রায় ২০০ রুটে ৯০০ সরকারি বাস এদিন রাস্তায় নেমেছে। ফলে গত তিনদিনের তুলনায় মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কম হয়েছে। সরকারি নির্দেশ ছাড়া এ ভাবে বেশি ভাড়া যে নেওয়া যায় না তা বুধবারই পরিষ্কার করে দিয়েছিল পরিবহন দপ্তর।
তা সত্ত্বেও এদিন চলেছে যেমন খুশি ভাড়া নেওয়ার প্রতিযোগিতা। কনডাক্টরদের জিজ্ঞেস করা হলে তাদের জবাব, যত আসন, তত যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে হলে যাত্রীদেরও সহযোগিতা প্রয়োজন। আর মালিকদের সংগঠনগুলোর দাবি, তারা পুরনো ভাড়াই নিতে বলেছেন। এর পরেও যদি কেউ বেশি ভাড়া নিয়ে থাকে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন সকাল থেকেই শহর ও শহরতলির রাস্তায় বাস-মিনিবাস নামতে দেখা যায়। তবে সংখ্যায় ছিল খুবই কম। বাস মালিকদের দাবি, ৩০ শতাংশ গাড়ি এদিন রাস্তায় নেমেছে। অধিকাংশ বাসে যাত্রীদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, বাসে পা দিলেই ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতা, হাওড়া থেকে সল্টলেক— অধিকাংশ বাস-মিনিবাসের কনডাক্টরই এ দিন যেমন খুশি ভাড়া হাঁকিয়েছেন।
বিএনআর-বাঙুরগামী ২২৭ নম্বর রুটের যাত্রী শ্যামল রায় বলেন, “আমি মাত্র দুটো স্টপেজে গিয়েছি। আমার কাছ থেকে ১০ টাকা নেওয়া হয়েছে। কনডাক্টর বলছেন, “আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।” একই অভিজ্ঞতা ২৩০, ২৩৪, কেবি ১৬, ৭৯বি, ৯৩ এবং ২২২ নম্বর রুটের বাস যাত্রীদেরও। বেলঘরিয়া থেকে গল্ফগ্রিন, হাতিয়ারা থেকে সেক্টর ফাইভগামী বহু রুটেই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গড়িয়া-বারাসত, ধর্মতলা-বারাসত, সাঁতরাগাছি-সল্টলেকগামী বাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের তরফে তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বেশি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি মেনে নেন। তিনি বলেন, “আমরা পুরনো ভাড়াতেই বাস নামানো হবে বলে জানিয়েছিলাম। যাঁরা এমন করছেন, তাঁদের বেশি ভাড়া নিতে বারণ করা হয়েছে।” অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও বাস মালিক ভাড়া বাড়াতে পারেন না। তার পরেও যদি কেউ বেশি ভাড়া নেয়, তা হলে সেটা ঠিক হচ্ছে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.