অভিরূপ দাস: শুক্রবার বিকেল থেকে শুরু হয়েছিল পড়ুয়াদের ঘেরাও। শনিবার সন্ধে পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আটক হয়ে রইলেন যাদবপুরের (Jadavpur)কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের (KPC Medical College) অধ্যক্ষ-সহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ আধিকারিক। টানা ৩৫ ঘণ্টা পর ঘেরাওমুক্ত হলেন তাঁরা। পডুয়াদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চালিয়ে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিল কর্তৃপক্ষ। তারপরই অচলাবস্থা কাটল এই মেডিক্যাল কলেজে।
কেপিসির ইন্টার্ন ডাক্তারদের দাবি ছিল, কোভিড আবহে দ্বিগুণ কাজ করতে হচ্ছে। এই অবস্থায় বৃত্তির অঙ্ক না বাড়ালে তা করা সম্ভব নয়। অবিলম্বে তাঁদের ভাতা বাড়াতে হবে। এই দাবি নিয়ে শনিবার দুপুর দেড়টা থেকে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে কর্তৃপক্ষ। দফায় দফায় চলে আলোচনা। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অনড় দু’পক্ষই। তাই কার্যত কোনও সমাধানসূত্র মিলছিল না। পড়ুয়াদে বক্তব্য, ”মাসে মাত্র ৭০১৬ টাকা স্টাইপেন্ড পাই। সেখানে অন্যান্য বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে স্টাইপেন্ড ২৮ হাজার টাকা। আমাদের এত কম কেন?”
সূত্রের খবর, অন্যান্য বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে যে অঙ্কের ক্যাপিটেশন ফি এবং টিউশন ফি লাগে, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে সেই খরচা অনেকটাই কম। কর্তৃপক্ষের একাংশের তাই পালটা বক্তব্য, পড়াশোনার খরচই যখন কম লাগছে তখন কীসের ভিত্তিতে পড়ুয়ারা সমান স্টাইপেন্ড দাবি করছে? অন্যান্য বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে কর্পোরেট মডেল মেনে খরচের অঙ্ক ঠিক হয়। কিন্তু কেপিসিতে ট্রাস্টি মডেল মেনে খরচ স্থির হয়। তাই তা কম বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
আন্দোলনকারীরা আরও বলছেন, হাসপাতালের অ্যাকাডেমিক বেতন প্রতি বছর বাড়ে। কিন্তু শেষ ৬ বছরে ভাতা বাড়েনি। অন্যদিকে, লকডাউন (Lockdown) এবং পরবর্তী সময়ে হাসপাতালে যাতায়াতের খরচ বেড়ে গিয়েছে। হাসপাতালের সিইও জয়দীপ মিত্র জানিয়েছেন, ‘‘অন্য বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় এখানে পড়াশোনার খরচ অনেক কম। সেই তুলনায় ন্যায্য বৃত্তিই দেওয়া হচ্ছে।’’ যদিও শেষ পর্যন্ত পড়ুয়াদের দাবি মেনে নেয় কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, বৃত্তির অঙ্ক বাড়ানো হবে, তবে তা কতটা বাড়বে, সেই সিদ্ধান্ত হবে পরে। এই আশ্বাসেই ঘেরাও তুলে নেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
কেপিসি’র সিইও জয়দীপ মিত্রর বক্তব্য, ইন্টার্নদের টাকা বাড়ানো হবে। কত টাকা করা হবে সেটা আগামী শনিবার জানানো হবে। ইন্টার্ন ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন চূড়ান্ত অনভিপ্রেত। এঁরা এখনও সরকারিভাবে ডাক্তার নন, পড়ুয়া। তাঁরা স্রেফ জেদের বশে ৩৫ ঘন্টা ধরে ঘেরাও করে রাখলেন। বিশেষ করে এই কোভিড আবহে ঘেরাও আন্দোলনে যেভাবে ধাক্কাধাক্কি, ঠেলাঠেলি হয়েছে তা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল। সূত্রের খবর, পুলিশ বারবারই জানিয়েছিল যে কর্তৃপক্ষ রাজি থাকলে তারা ঘেরাও তুলে সকলকে মুক্ত করবে। তবে কেপিসি কলেজের কেউ তাতে রাজি হননি। ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশে আপত্তি ছিল। তাই তাঁরা নিজেরাই পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.