দীপঙ্কর মণ্ডল: শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও কাটল না প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন জট। ফলে, আপাতত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তেই অনড় শিক্ষকরা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাঠামো (পিআরটি স্কেল) মেনে বেতন এবং ১৪ জন শিক্ষকের নিয়ম বহির্ভূত বদলির অভিযোগে গত এক সপ্তাহ ধরেই বিকাশ ভবনের সামনে অনশন করেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা।শনিবার আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়া শুনে উদ্ভুত জট কাটানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী । সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রতিনিধিদের বিকাশ ভবনে আলোচনায় ডাকেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বৈঠকও হয়। কিন্তু, তাতেও সমাধান সূত্র বের হল না।
বৈঠক শেষে শিক্ষকদের তরফে জানানো হয়, বেতন সংক্রান্ত তাদের যে দাবি তা নিয়ে কোনও সদর্থক আশ্বাস শিক্ষামন্ত্রী দিতে পারেননি। শিক্ষামন্ত্রী যে আশ্বাস দিয়েছেন, তাতে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। অন্যদিকে, ১৪ জন শিক্ষকের নিয়ম বহির্ভূত বদলির যে অভিযোগ উঠেছিল, সে প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকা সদর্থক। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, মূলত ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত বজায় রাখতেই শিক্ষকদের বদলি করা হয়েছে। তবে, সোমবারের মধ্যে সমস্ত শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা হবে। যদি কাউকে বেআইনিভাবে ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে, তাহলে তা বাতিল।
বদলি নিয়ে শিক্ষকদের সদর্থক আশ্বাস দিলেও, বেতন কাঠামো নিয়ে তাদের দাবি পূরণ করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, “শিক্ষকরা যে উচ্চতায় বেতন বাড়ানোর দাবি করছেন, সেই উচ্চতায় দাবি মানা আর্থিক কারণেই সম্ভব নয়। আমি চেষ্টা করব যাতে দ্রুত একটা সমাধানসূত্র বের করা যায়। শুধু মুখে বললেই তো হবে না, আর্থিক সংগতিও থাকা দরকার। সরকারের অতিরিক্ত সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে শিক্ষকদের বেতনের দাবি মানতে হলে। যা দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়।” শিক্ষকদের দাবি পুরোপুরি না মানা গেলেও আংশিক মানা হতে পারে, এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখছেন। যতটা করা সম্ভব আমরা করব।”
তবে একই সঙ্গে তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে দ্রুত কাজে ফেরার অনুরোধও রেখেছেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন,”শিক্ষকদের একটা দায়িত্ববোধ এবং কর্তব্য থাকা উচিত। এটাও খেয়াল রাখা উচিত, তাদের অভাবে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস করতে পারছে না। এটা ওরা সহানুভূতির সঙ্গে দেখুক।” সেই সঙ্গে আন্দোলনের রাজনীতিকরণ নিয়েও শিক্ষকদের কটাক্ষ করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শনিবার সকালেই অনশন মঞ্চে যান। সে প্রসঙ্গে পার্থবাবু বলেন, “যে মঞ্চে দিলীপ ঘোষ গিয়েছেন সেখানে আমার যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। দিলীপবাবু যখন গিয়েছেন, ওনাকে আর একটু সময় দেওয়া হোক। দেখা যাক উনি কোনও অর্ডার আনতে পারেন কিনা। দিলীপ ঘোষ একটা অর্ডার আনুক, যে টাকাটা বাড়বে সেটার পুরোটা দায়িত্ব নেবে কেন্দ্র।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.