গোবিন্দ রায়: হাই কোর্টের নির্দেশে কাশীপুরের (Cossipore Death) নিহত বিজেপি নেতার অর্জুন চৌরাসিয়ার ময়নাতদন্তের পর শেষকৃত্য সম্পন্ন হল নিমতলা মহাশ্মশানে। ময়নাতদন্তে সময় লাগল প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা। তবে বিজেপি এই মৃত্যুকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোয় কসুর করেনি। পালটা প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও (TMC)। মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “যেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিয়েছেন যে এটা খুন হয়েছে, সেখানে কেন্দ্রের একটি হাসপাতাল থেকে সঠিক রিপোর্ট আসতে পারবে কী করে!” এর মধ্যেই রহস্যমৃত্যুতে তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। চৌরাসিয়া বাড়ি ও লাগোয়া এলাকার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, এদিন কম্যান্ড হাসপাতালের প্যাথোলজি ও ফরেন্সিক মেডিসিনের চিকিৎসক হেমন্ত ও চিকিৎসক জসবিন্দরের তত্ত্বাবধানেই চলে ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে খুনের প্রমাণ মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। এমনকী, দেহে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্নও মেলেনি বলেই খবর। অর্জুনের মৃত্যুর পরেই শাসকদল তৃণমূলের বিরদ্ধে খুনের অভিযোগে সরব হয়েছিল বিজেপি। এমনকী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেও খুনের তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন। উঠেছিল সিবিআই তদন্তের দাবিও। সেখানে এবার সরাসরি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের প্রমাণ না মেলায় অস্বস্তিতে পড়তে হবে বিজেপিকে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটা খুন, না আত্মহত্যা।
এদিনই অর্জুনের রহস্যমৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতের বাড়ির সামনে ও চারপাশে আটটি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। যে পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়, সেখানে তদন্তে যান লালবাজারের হোমিসাইড শাখার আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণ সেখানে নমুনা সংগ্রহ চলে। একটি ট্রাইপডে থ্রিডি স্ক্যানার বসিয়ে চলে নজরদারি। সন্দেহজনক কিছু রয়েছে কি না তা শনাক্ত করা হয়। কোয়ার্টারের বাইরের ছবির পাশাপাশি ভিতরে, যেখানে দেহটি উদ্ধার হয় সেখানকার ছবিও তোলা হয়। একই সঙ্গে কোয়ার্টারের অন্যান্য ঘরের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা, এক ঘর থেকে অন্য ঘরের দূরত্ব সমস্তটাই নোট নিয়েছেন তদন্তকারীরা। মোবাইলের কল লিস্ট ধরে খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেদিন রাতে শেষ কার কার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল।
শনিবার আদালতের নির্দেশেই কমান্ড হাসপাতালের প্রধান, কল্যাণীর এইমস ও আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একজন করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং আরজিকর হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে নিয়ে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়। ভিডিওগ্রাফও করা হয়।
এদিকে অর্জুন-মৃত্যুতে সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ তোলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ দিন তিনি বলেন, “রাজ্যের পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে ময়নাতদন্ত নিরপেক্ষ হয় না। কমান্ড হাসপাতাল থেকে ঠিকঠাক রিপোর্ট আসবে। এটা আমাদের বিশ্বাস।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.