রাহুল রায়: “দোল পূর্ণিমা নিশি, নির্মল আকাশ, মৃদুমন্দ বহিতেছে মলয় বাতাস…।” আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। গত দু’বছর ধরে করোনা অতিমারী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে কেটেছে। যার জেরে নমঃ নমঃ করেই বাঙালির কেটেছে বারো মাসে তেরো পার্বণ। আপামর বাঙালিকে প্রাণের প্রিয় কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোও সারতে হয়েছে কোনও রকমে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে এবার কোজাগরীতে মেতেছে বাংলা।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী এবছর লক্ষ্মীপুজোর সময়কাল শনিবার অর্থাৎ ৮ অক্টোবর ভোররাত ৩টে ২৯ মিনিট ৪২ সেকেন্ড থেকে পূর্ণিমা লেগেছে। তবে ৯ অক্টোবর অর্থাৎ রবিবার রাত ২টো ২৫ মিনিট ৫ সেকেন্ড পর্যন্ত পূর্ণিমা তিথি থাকবে। ফলে রবিবার দিনভর থাকছে পূর্ণিমা। যথারীতি প্রথা মেনেই সাড়ম্বরে ধুমধাম করে বাঙালি পরিবারগুলো লক্ষীপুজো করছে।
কিন্তু ফুল, ফল, আনাজ, সবজি, পুজোর যাবতীয় উপাচারের দাম লাগামছাড়া। দু’বছর সবকিছুরই দাম অনেকটাই বেড়েছে। আসলে পেট্রলের দাম ক্রমশ বাড়তে থাকায় আনাজের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তাই বাজারের হাল দেখে কার্যত মাথায় হাত মধ্যবিত্ত গৃহস্থের। অন্যান্য বছরের থেকে এবছর দাম বেড়েছে প্রতিমা, পুরোহিত সব কিছুর। ফলে কীভাবে মা লক্ষীর আরাধনা করা হবে সেটা নিয়ে চিন্তিত গৃহকর্ত্রীরা। পুজোর কেনাকেটা করতে গিয়ে পকেটে ছেঁকা লাগছে গৃহকর্তাদেরও। সব মিলিয়ে পুজোর চড়া বাজারদর দেখে ঘুম উড়ে গিয়েছে মধ্যবিত্ত আমজনতার। তবে চড়া দামের মধ্যেও বিক্রিবাটা বেশ ভাল বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে পুজো করতে গিয়ে গৃহস্থের মুখ করুণ হলেও ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
তবে বাজার চড়া থাকলেও করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে উৎসবের আমেজ গায়ে মেখে নিয়েছে বাঙালি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই বাড়ির পুজোর ছবি আপলোড করতে শুরু করেছেন নেটিজেনরা। বাদ পড়েননি সেলেবরাও। আলপনা ও আম্রপল্লবে ঘট সাজিয়ে তোলা হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রদীপের আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছে দেবীর আসন। শনিবার রাত পর্যন্ত পুজোর কেনাকাটা করতে বাজারে পৌঁছেছেন অনেকেই। কিছু অঞ্চলে বৃষ্টি হলেও, ছাতা হাতেই ফল কিংবা মিষ্টির দোকানে পৌঁছতে দেখা যায় তিলোত্তমার বাসিন্দাদের। যেহেতু লক্ষ্মীদেবীর ভোগে অনেকেই মাছ রাখেন, তাই মাছের বাজারেও ভিড় ছিল এদিন। ভিড় চোখে পড়েছে দশকর্মা ভাণ্ডারেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.