Advertisement
Advertisement

Breaking News

Tangra Case

‘কিছুই করিনি, পুলিশ ধরবে জানলে আত্মহত্যার অন্য পথ বাছতাম’, উলটো সুর ট্যাংরার প্রসূনের গলায়

নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা ট্যাংরার অভিজাত দে পরিবারের ছোট ছেলে প্রসূন দে-র।

Prasun Dey claims he did not do anything in Tangra Case
Published by: Paramita Paul
  • Posted:February 25, 2025 12:23 pm
  • Updated:February 25, 2025 12:23 pm  

অর্ণব আইচ: “আমি কিছু করিনি। কী হয়েছে জানি না। এভাবে পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হবে জানলে মরার অন্য পথ বেছে নিতাম।” হাসপাতালের বেডে শুয়ে এই দাবি তুলে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা ট্যাংরার অভিজাত দে পরিবারের ছোট ছেলে প্রসূন দে-র।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালেই বাড়ির দুই স্ত্রী সুদেষ্ণা ও রোমিকে খুন করা হয়। এর পর বাড়ির দুই ছেলে প্রণয় দে ও প্রসূন দে তাঁদের দুই স্ত্রী ও কিশোরী মেয়ের দেহ নিয়েই সারাদিন বাড়িতেই ছিলেন। বাড়ির বড় ছেলে প্রণয় দে তাঁর বয়ানে পুলিশকে জানিয়েছেন যে, তাঁর ভাই প্রসূনই হাতের শিরা কেটে ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করেছেন তাঁর স্ত্রী সুদেষ্ণা ও প্রসূনের স্ত্রী রোমিকে। এমনকী, প্রসূন তাঁর ছেলের হাতও কাটার চেষ্টা করেন। একই বয়ান দিয়েছে প্রণয়ের ছেলে প্রতীপও। কাকা প্রসূনের দিকেই আঙুল তুলেছে সে। ফলে প্রসূন বুঝতে পেরেছেন যে, তাঁকে অপরাধীর চোখেই দেখেছ পুলিশ। সন্দেহ করছে ‘খুনি’ বলে। তাই এবার নিজের পালানোর রাস্তা খুঁজছেন প্রসূন। সেই কারণে প্রণয় ও প্রতীপ যা বলেছেন, তার উল্টো পথে গিয়ে প্রসূন নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। দুষছেন নিজের দাদাকেও।

Advertisement

ট্যাংরায় বাড়ির দুই স্ত্রী ও কিশোরী মেয়েকে খুন করে গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটানোর ঘটনায় যুক্ত বাড়ির বড় ছেলে প্রণয় দে ভর্তি এনআরএস হাসপাতালে। সোমবার রাতে বাইপাসের কাছে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নাবালক প্রতীপকে নিয়ে এসে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এ ছাড়াও হাসপাতালে তাঁদের জেরাও করা হবে। পুলিশের ধারণা, দু’জনের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা রয়েছে। হাসপাতালে ফের তাঁরা আত্মহত্যার চেষ্টা করতে পারেন। তাই তাঁদের উপর কড়া নজরদারি রাখছে লালবাজার। চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁদের কাউন্সেলিংও করানো হতে পারে।

বেসরকারি হাসপাতালে শুয়ে প্রসূন বয়ানে বলেন, “আমি কিছু করিনি। আমি একতলায় ছিলাম। কী হয়েছে, কিছুই জানি না। দাদা সব বলতে পারবে। বউদি ও আমার স্ত্রী নিজেদের হাত কেটেছেন, এমনও হতে পারে।” যেহেতু ময়নাতদন্তে বলা হয়েছে যে, দুই স্ত্রীকে হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়েছে, তাই উলটো বয়ান দেওয়ার ফলে পুলিশের মূল সন্দেহ রয়েছে প্রসূনের উপরই। কয়েকজন পুলিশ আধিকারিককে প্রসূন জানান, দুর্ঘটনা সত্ত্বেও বেঁচে যাবেন, ভাবতে পারেননি। এভাবে পুলিশের জেরার মুখে পড়বেন জানলে এই পদ্ধতিতে আত্মহত্যার চেষ্টা করতেন না। তার জন্য এমন পথ বেছে নিতেন, যাতে তাঁদের মৃত্যুই হত। এদিকে, তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, দে পরিবারের সমস্ত গয়না বন্ধক দেওয়া। ইতিমধ্যেই পুলিশ সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে।

পুলিশ জেনেছে, ১৭ ফেব্রুয়ারির তিন দিন আগে, গত ১৪ তারিখ থেকেই বাড়িতে পায়েস তৈরি করে খাওয়ানো হচ্ছিল। জ্যোতিষ অনুযায়ী প্রণয় পায়েসকে শুভ বলে মানতেন। হঠাৎ কেন পায়েস খাওয়ানো হল, তা নিয়ে যাতে বাড়ির কিশোরী মেয়ে প্রিয়ংবদা ও ছেলে প্রতীপের কোনও সন্দেহ না হয়, তার জন্য তাঁদের ‘পরীক্ষার জন্য পায়েস শুভ’ বলে নিমপাতা ও তুলসীপাতা মিশিয়ে পায়েস খাওয়ানো হয়। ১৭ তারিখে পায়েসের সঙ্গে প্রণয়ের ঘুমের ওষুধ, প্রতীপের শ্বাসকষ্টের ওষুধ, সুদেষ্ণা-রোমিদের সুগার, রক্তচাপের ওষুধ গুঁড়ো করে মেশানো হয়। দুই কিশোর ও কিশোরীর হাতে সেই ‘বিষ পায়েস’ তুলে দেন তাদের মায়েরাই। নাবালক প্রতীপ পুলিশকে জানিয়েছে, অভিভাবকরা যে আত্মঘাতী হতে চলেছেন, তার ইঙ্গিত দেওয়া হয় তাকে ও দিদিকে। ১৮ তারিখ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সে দিদি প্রিয়ংবদার ঘরে গিয়ে তাকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখে। সে দিদির পাশে ঘুমিয়ে পড়েছিল। তখনই কাকা এসে তার হাত কাটলে সে উঠে পড়ে। ওই নাবালিকার ঘরেই প্রসূন নিজের হাত কাটতে গেলে প্রতীপ চিৎকার করে ওঠে। প্রতীপের দাবি, ঘুম থেকে ওঠার পর মা ও কাকিমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সে একতলার ঘরে চলে যায়। বাবা ও কাকাকে বলে, সে বাঁচতে চায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
News Hub