সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখানো, পড়ানো অনেক হয়েছে। এবার নিজেরা বুঝে নিন। নিজেরাই সমস্ত পরিকল্পনা করে কাজে নামুন। রাজ্যের গ্রামাঞ্চলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব এবার তৃণমূল বিধায়কদের হাতেই ছেড়ে দিতে চাইছেন মাস্টারমশাই প্রশান্ত কিশোর। টিম পিকের তরফে ইতিমধ্যেই বিধায়কদের কাছে এই বার্তা পৌঁছতে শুরু করেছে।
লোকসভা ভোটে দলের ফলাফল খারাপ হওয়ায় আগামী বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে চিন্তা বেড়েছে তৃণমূল শিবিরে। এক লাফে ২ থেকে সাংসদ সংখ্যা ১৮য়ে পৌঁছে যাওয়া বিজেপি যে বেশ শক্ত প্রতিপক্ষ হবে, তা বেশ টের পেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুশকিল আসানের লক্ষ্যে তাই নির্বাচনী কৌশলী প্রশান্ত কিশোর সাহায্য নিচ্ছে তৃণমূল। আর প্রশান্ত কিশোররও দায়িত্ব পাওয়ার পর তেড়েফুঁড়ে কাজে নেমেছেন। রীতিমতো
নিজের পছন্দের সদস্যদের নিয়ে টিম তৈরি করে সল্টলেকের অফিসে বসে চলছে কাজকর্ম। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মপদ্ধতি ঠিক করে দেওয়ার পাশাপাশি দলের সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু নিচু স্তরের নেতাদের উপর পর্যন্ত টানা নজর রেখেছে টিম পিকে।
উনিশের ফলাফলে জনবিচ্ছিন্নতার যেটুকু প্রভাব পড়েছে, তা মিটিয়ে ফেলার লক্ষ্যে একাধিক স্ট্র্যাটেজি সাজিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি। আর তাতে অংশ নিয়ে বিধায়করা যে নিজেদের এলাকাবাসীর মনোভাব বুঝতে তাঁদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াবেন, প্রয়োজনে সমর্থন ফিরে পেতে তাঁদের সঙ্গে একেবারে সাধারণ নাগরিকের মতো করে মিশবেন, ঘরে ঘরে রাত্রিবাস করবেন – এসব
প্রশান্ত কিশোরেরই ঠিক করে দিয়েছেন। নজরও রেখেছেন তাঁদের উপর। একমাস ধরে এই কর্মসূচি পালনের পর জনমানসে আদৌ কতটা দাগ কাটতে পারলেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা, তার রিপোর্ট নেবেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর এই পর্যায়ে এসেই সুতো গোটাতে শুরু করছেন প্রশান্ত কিশোর। গ্রামাঞ্চলের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করার দায়িত্ব তিনি ছাড়তে চান বিধায়কদের উপরেই। তবে এখনই এবিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সোমবার ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পরই ঠিক করা হবে কোন এলাকায় কাদের উপর দায়িত্ব ছাড়া হবে। আলোচনা সাপেক্ষে একেকটি জেলা ধরে এভাবে কাজ করতে হবে বিধায়কদের। প্রশান্ত
কিশোরের পরামর্শমতো ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে জেলায় জেলায় কিছুটা জনসংযোগ বাড়লেও, সব জায়গায় এতটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করেছে টিম পিকে। নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো যায়নি, পিকের দপ্তরে এমন অভিযোগের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। তা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সেসব নিয়েও সোমবারের বৈঠকে আলোচনার সম্ভাবনা। সবমিলিয়ে, মাস্টারমশাই প্রশান্ত
কিশোর দেখতে চান, তাঁর ছাত্ররা অর্জিত বিদ্যা কীভাবে এবার কাজে লাগান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.