নব্যেন্দু হাজরা: হাড়কাঁপানো ঠান্ডা নেই। বেলার দিকে মিঠে রোদ। একেবারে আদর্শ ওয়েদার। এমন সময় পিকনিক করতে বেরিয়ে না পড়লে হয়! বেরিয়েও পড়েছে বাঙালি। ভোর হলেই ডেকচি, হাতা, ম্যাটাডরে চাপিয়ে ডেস্টিনেশনে ছুট। দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া-হুগলির অধিকাংশ পিকনিক স্পটেরই আগামী দু’মাসের জন্য শনি এবং রবিবার কোনও জায়গা খালি নেই। সব বুকড। তবে উপায়?
[বেলেল্লাপনায় ছাড় নেই মহিলাদেরও, বড়দিন-বর্ষবরণে সক্রিয় পুলিশ]
স্পটের অপেক্ষা করছেন না অনেকেই। একচিলতে ফাঁকা জায়গা পেলেই হল। শুরু চড়ুইভাতি। অবশ্য অনেকেই বলছেন, চড়ুইভাতি বলতে বছর দশেক আগেও মানুষ যেটা বুঝত এখন আর তেমনটা নেই। পরিবার নিয়ে হোক বা বন্ধু-বান্ধব, এখনকার ৯০ শতাংশ পিকনিকেই মদ, ডিজে মিউজিক মাস্ট। উদ্দাম নেশা, উচ্চস্বরে চলা গানের সঙ্গে নাচ। দূষণের রিখটার স্কেল তখন বহু মাত্রা অতিক্রম করেছে। দেখার কেউ নেই। তাই বারণেরও কেউ নেই। পরিবেশকর্মীদের কথায়, শব্দ থেকে পরিবেশ-দূষণে তখন মাত্রা ছাড়ায় সবকিছুই। কিন্তু পিকনিকে তো ডিজে বক্স বারণ। বারণ স্পটে মদ নিয়ে প্রবেশও। তবে? তা নামেই। জানালেন উলুবেড়িয়ার কাছে এক পিকনিক স্পটের মালিক। যেমন ধরা যাক গাদিয়াড়া। স্পট বুকের নাম বলতেই জানিয়ে দেওয়া হল নিষেধাজ্ঞার কথা। কিন্তু তা যে সবাই সব সময় মেনে চলেন, তেমনটা নয়, জানালেন পার্কের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীই।
[এবার শহরে প্রকাশ্যে ধূমপান করলেই পড়তে হবে জরিমানার কোপে]
গাদিয়াড়া থেকে সবুজদ্বীপ। গড়চুমুক থেকে টাকি-সর্বত্রই ভিড় উপচে পড়ছে। চন্দননগরে কেএমডিএ পার্ক, সবুজদ্বীপ, বনগাঁর পারমাদন অভয়ারণ্য, টাকি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার, পূজালি, বারুইপুর, হাওড়ার গাদিয়াড়া, গড়চুমুক, ফুলেশ্বর, দেউলটি-র মতো জায়গাগুলোতে এখন স্পট ফাঁকা পাওয়াই দায়। পিকনিকে মজেছে গোটা বাংলা। কিন্তু এই পিকনিকের মাঝেই অশনি সংকেত দেখছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের কথায়, এই সব পিকনিক স্পটগুলোয় প্রশাসনের কোনও নজরদারি থাকে না। যা খুশি তাই হয় সেখানে। কারও কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। ডিজে এবং মাইকের তাণ্ডবে যেমন হয় শব্দদূষণ, তেমন খাওয়া-দাওয়ার পর যেখানে সেখানে উচ্ছিষ্ট পড়ে হয় পরিবেশ দূষণও। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তর দাবি, “অবিলম্বে সরকারের এই পিকনিক স্পটগুলির জন্য গাইডলাইন তৈরি করে নজরদারি চালানো উচিত। বারণ থাকা সত্ত্বেও পিকনিক স্পটে ডিজে চলে। কেউ দেখার নেই। প্ল্যাস্টিক-থার্মোকল পড়ে থেকে পরিবেশ নষ্ট হয়। প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।” যদিও পুলিশের দাবি, বিশেষ উৎসবের দিনগুলোয় প্রতিটি পিকনিক স্পটেই অতিরিক্ত পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়েন থাকে। সীমান্তবর্তী যে সমস্ত পিকনিক স্পটে বিএসএফও নজরদারি চালায়।
[দাঁড়ি পড়ছে দক্ষিণেশ্বর-বেলুড়মঠ ফেরি পরিষেবায়, চাকরি পাচ্ছেন মাঝিরা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.