ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলায় তাঁর কাজের শুরুটা অনেকদিনই হয়েছে। তবে পুজোটা এভাবে শুরু হবে তা বোধহয় তিনি ভাবেননি। মহালয়ার সন্ধেয় একজন মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে এভাবে চণ্ডীপাঠ শোনার কথা বোধহয় তিনি ভাবতেও পারেন না। তিনি প্রশান্ত কুমার। ইন শর্ট ‘পি কে’। তৃণমূল দলে তিনি এই নামেই জনপ্রিয়। শহরে এলেন কলকাতার পুজো দেখতে। ক’টা দিন কলকাতাতেই আছেন তিনি। তার ফাঁকেই শনিবার মহালয়ার সন্ধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলে এলেন তৃণমূলের দলীয় মুখপাত্র জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যার প্রকাশ অনুষ্ঠানে।
পুজোর উৎসব, বাঙালির এতদিনের লালিত সংস্কৃতি, প্রথিতযশাদের বক্তব্য সবটা শুনছিলেন। তৃণমূলনেত্রী মঞ্চে ওঠার পর থেকে আর তাঁর নজর সরেনি। পুজোয় মুখ্যমন্ত্রীর ঠাসা কর্মসূচি। একের পর এক পুজো উদ্বোধন। তার মাঝখানেই শিল্পীদের অনুষ্ঠান বেশ তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলেন পি কে।
এমন সন্ধ্যা ছেড়ে চট করে উঠতে চাইছিলেন না। বেশ মজেই ছিলেন। মাঝে একবার বেশ তটস্থ। মুখ্যমন্ত্রী তখন মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন। কিছুটা রাজনীতি ঘেঁষাই। সঙ্গে সঙ্গে নোট। তারপরই জাগো বাংলার পুজো সংখ্যার উদ্বোধন। মঞ্চ থেকে নেমেই তাই নিয়ে পি কে—কে জরুরি কিছু কথা বলে দেন মমতা। কত সংখ্যক জাগো বাংলা কাগজ সপ্তাহে ছাপা হয়, কতদিন ধরে কাগজ বা ‘উৎসব সংখ্যা’ বেরোচ্ছে। এমনকী, তৃণমূল যখন বিরোধী দল ছিল, সেসময় থেকে যে এই কাগজ ছাপা হচ্ছে, তার ইতিহাসও পি কে—কে জানিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। এ বছর পুজো সংখ্যার প্রচ্ছদে বিদ্যাসাগরকে স্মরণ করে বাংলা বর্ণমালা এঁকেছেন মমতা। বাংলায় তার মাহাত্ম্য পি কে—কে বুঝিয়ে দেন মমতা।
অনুষ্ঠান শেষ করেই মুখ্যমন্ত্রীর ইশারা, বেরোতে হবে। মমতার এমন স্ফূর্তি পি কে—র দেখা। তবে বাঙালির সেরা উৎসবের বিরাট আয়োজন এবং পুজোয় মমতাকে ঘিরে আকর্ষণ দেখে বোধহয় চোখে কিছুটা ধাঁধা লেগে গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে এক নিমেষে তৈরি। ছুটলেন পুজো উদ্বোধনে। পুজো শেষ হওয়া পর্যন্ত বোধহয় তাঁর সময় হবে না। দ্রুত তাই কলকাতার রৌনক দেখে নেওয়া। মাঝে শুধু এক মুহূর্ত সময়। ভাল লাগল আপনার? পি কের চটজলদি জবাব, “হ্যাঁ, দারুণ।” পুজোয় এই প্রথম কলকাতায়। আলো ঝলমল শহরের রোশনাই এভাবে দেখে দৃশ্যতই বেশ খুশি। পুজোয় কলকাতা আসার কথা তাঁর ছিলই। দলীয় স্তরে কিছু কর্মসূচি ছিল। তার অনেকটাই সারা।
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে টানা কাজ চলছে। ক’দিন আগেই বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন। পুজোর ক’টাদিন আপাতত সেই কাজে ছুটি। দলীয় নেতা-কর্মীদের পুজোয় রাজনীতি বাদ দিয়ে যে যার মতো করে প্রবল জনসংযোগের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। যা খবর তাতে অবশ্য একেবারে খালি হাতে বসে থাকবেন না পি কেও। এ পুজোয় বড় কোনও কর্মসূচি তাঁর নেই। বরং তিনিই এ পুজোয় তৃণমূলের কর্মসূচি একটু ‘ফলো’ করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.