স্টাফ রিপোর্টার: করোনা (Coronavirus) চলে যায় ক্ষত রেখে। ডেকে আনে মৃত্যুও। যেমনটা হল হোমবাহাদুর থাপার (৫৯)। এই প্রথম, শহরে কোভিডকে হারিয়েও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন এক পুলিশকর্মী। আক্রান্ত হওয়ার নির্দিষ্ট দিন পর করোনা নেগেটিভ মানেই বাঁচোয়া, এমন ধারণাকে নস্যাৎ করে দিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার কর্মীর মৃত্যু। গত আড়াই মাস ধরে কোভিড আক্রান্ত ছিলেন গোয়েন্দা শাখার ওই এএসআই (ASI)। বেলভিউ হাসপাতালে ভরতি ছিলেন। শুক্রবার তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। পরিবারের লোক হাঁফ ছাড়েন। হাসপাতাল থেকে ছুটিও দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়ি ফিরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ভরতি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। রবিবার এসআইয়ের মৃত্যু হয়।
শহরের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাসের প্রাথমিক অনুমান, করোনা ভাইরাসের ছোবলে হৃদযন্ত্র আঘাত পেয়েছিল হোমবাহাদুরের। যেকোনও ভাইরাস হৃদযন্ত্র বিকল করে দেয়। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয় মায়োকার্ডাইটিস। রোগী সুস্থ হয়ে উঠলেও বুক ধরফর করে। আচমকাই হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যেমনটা হয়েছে ওই এসআই-এর। ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যেত বলেই অনুমান চিকিৎসকদের। করোনা থেকে সেড়ে ওঠা রোগীর মোটামুটি ৪৫ শতাংশে বাড়ি ফিরে যাওয়ার পরও কিছু চিকিৎসা লাগে। ৪ শতাংশ মানুষকে কিছু দিন রিহ্যাবে রেখে চিকিৎসা করলে ভাল হয়। অর্থাৎ করোনামুক্ত মানেই সম্পূর্ণ সুস্থ এমন ধারণা ভুল।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. রাজা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সেরে ওঠার দেড়-দু’মাস পরও কিছু রোগীর শুকনো কাশি থেকে যাচ্ছে। বুকে জ্বালা ভাব থাকছে। গভীর ভাবে শ্বাস টানতে, শ্বাস ধরে রাখতে ও ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে। এর প্রধান কারণ ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতি। রবিবার মারণ ভাইরাসের কবলে পড়ে প্রাণ হারান কলকাতা পুলিশের আরও এক আধিকারিক। এদিন সকালে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় কলকাতার সশস্ত্র পুলিশের পঞ্চম ব্যাটেলিয়ানের এএসআই সিদ্ধান্তশেখর দে-র। তিনি প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে ওই বেসরকারি হাসপাতালে করোনার সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে টুইট করে শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতা পুলিশের কমিশনার অনুজ শর্মা। নগরপাল এদিন তাঁর সহকর্মী করোনাযোদ্ধাকে এদিন কুর্নিশ জানিয়ে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.