Advertisement
Advertisement

Breaking News

Gariahat Murder case

গড়িয়াহাটের জোড়া খুন কাণ্ডে ‘দরজা রহস্য’ সমাধানে ফরেনসিক ও গোয়েন্দারা

ছক কষে সিসিটিভি ঢাকতেই কি বাড়ির সামনে মালবাহী গাড়ি?

Police wants unveil the door mystery of Gariahat Murder case | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:October 19, 2021 9:57 am
  • Updated:October 19, 2021 9:57 am  

অর্ণব আইচ: সন্ধ্যার মুখেই কাঁকুলিয়া রোডে সুবীর চাকির বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল মালবাহী গাড়ি। সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুনের পর ওই মালবাহী গাড়ির আড়ালেই মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তাই CCTV-তে ছবি উঠলেও সহজে শনাক্ত করা যায়নি তাদের। এখানেই পুলিশের প্রশ্ন, রীতিমতো খুনের ছক কষেই কি খুনিরা ওই গাড়িটি নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডে চাকি পরিবারের বাড়ির সামনে?

খুনিদের সঙ্গে দেখা হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই যে সুবীর চাকি খুন হন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত পুলিশ। আর এই ছক কষেই খুনিরা সঙ্গে নিয়ে আসে ছুরির মতো ধারালো অস্ত্র। সেটি সঙ্গে নিয়ে পালায়ও তারা। বাড়িতে তারা অস্ত্রটি ধুয়েও নেয় বলে পুলিশের ধারণা। এদিকে, ঘরের বন্ধ দরজা নিয়েও শুরু হয়েছে রহস্য।

Advertisement

রবিবার রাতে মালিক ও চালকের দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। কিন্তু তদন্তের মোড় ঘোরে সোমবার। সুবীরবাবুর বাড়ির একতলার অংশ ভাড়া দিয়েছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থাকে। ওই সংস্থার কর্মীরা অফিসে ঢুকে জানতে পারেন খুনের কথা। কিন্তু ধাক্কা খান অফিস লাগোয়া কম্পিউটার রুমে ঢুকতে গিয়ে। একতলার অফিস থেকে কাঠের সিঁড়ি সামান্য বেয়ে কম্পিউটার রুমের দরজা। সাধারণত ওই দরজাটি খোলাই রাখেন অফিসের কর্মীরা। ঘরটির অন্যপাশে আরও একটি দরজা। সেই দরজা দিয়ে সুবীরবাবুদের দোতলার দিকেও যাওয়া যায়। ওই দরজাটি সুবীরবাবুদের দিক থেকে বন্ধই থাকত।

[আরও পড়ুন: কলকাতার রাস্তায় পড়ে চাদরে মোড়া চিতাবাঘের চামড়া, মিলল লেজও]

খুনি বা খুনিরা ওই দরজাটি খুলে কম্পিউটার রুমে ঢোকে। অফিস লাগোয়া দরজাটি ভিতর থেকে লক করে দেয়, যাতে অফিস থেকে কেউ ভিতরে না আসতে পারেন। তদন্ত চলাকালীন এই দরজাগুলি পরীক্ষা করেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও লালবাজারের গোয়েন্দারা। পুলিশের মতে, বাড়িটি সম্পর্কে অত্যন্ত ভাল ধারণা থাকলেই এই কাজ সম্ভব। তাই এই খুন সুবীরবাবুদের যে পরিচিতদেরই কীর্তি, সেই সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত। মঙ্গলবার স্নিফার ডগ দিয়ে তল্লাশি চালানো হবে বলে জানা গিয়েছে। 

তদন্ত চলাকালীন পুলিশ পাশেই একটি বাড়ি থেকে একটি সিসিটিভি ক্যামেরার হদিশ পায়। ওই সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, বাড়িটির গেটের সামনেই দাঁড় করানো রয়েছে একটি মালবাহী গাড়ি। বাড়ির গেটের একটি অংশ আড়াল করে রেখেছে গাড়িটি। তার আড়াল দিয়েই বের হয় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি। মুখে ছিল মাস্কও। তাই তাদের অস্পষ্ট চেহারা ধরা পড়ে। সেই কারণেই সিসিটিভির ফুটেজে তাদের শনাক্ত করা সহজ হয়নি। বরং কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলের খোয়া যাওয়া মোবাইল দু’টির কল লিস্ট বের করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার আগে কার বা কাদের সঙ্গে মালিক ও চালকের কথা হয়েছিল।

যাদের সঙ্গে কথা বলার পর সুবীরবাবু ও তাঁর চালক বেরিয়ে আসেন, তাদের শনাক্ত করা হয়। সেই অনুযায়ী দু’জনকে পুলিশ আটকও করে। তাদের জেরা করা হচ্ছে। এদিকে, জানা গিয়েছে, চালক রবীন মণ্ডল মোমিনপুর এলাকার বাসিন্দা। প্রায় দশ বছর ধরে সুবীরবাবুর গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর অত্যন্ত বিশ্বস্ত ছিলেন। রবীনবাবুর তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি। মূলত সেই কারণে যাতে বাড়িটি বেশি দামে বিক্রি হয়, সেই চেষ্টা করছিলেন রবীন মণ্ডলও। তাই তিনি জমি ও বাড়ির দালালদের সন্ধান চালিয়ে তাঁদের নিয়ে আসতেন বাড়িটি দেখাতে। বাড়িটিতে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন প্রোমোটার ও ডেভেলপারও। সেই সূত্র ধরেও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: আর জি করে অতিমারী আইন প্রয়োগ রাজ্যের, তবু আন্দোলনে অনড় পড়ুয়ারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement