অর্ণব আইচ: ‘গুপ্তধনের সন্ধান’ করতে গিয়েই ঘটেছিল বিপদ। ৬ ফুট গর্ত থেকে সোনালি রঙের কৌটো দেখেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন নির্মাণকাজের সুপারভাইজার ও নির্মাণকর্মী। কোদালের ঘায়ে সেই সোনালি কৌটো ভাঙতে গিয়েই ঘটল বিস্ফোরণ (Beliaghata Blast)। লোকমান মোল্লা নামে ওই নির্মাণ শ্রমিকের হাতের কবজি থেকে ‘উড়ে’ যায়। হাসপাতালে হাতের ওই অংশ অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় তন্ময় ভৌমিক নামে এক প্রতিবেশী যুবকের পায়ে বোমার টুকরো লাগে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
সোমবার দুপুরে পূর্ব কলকাতার বালিমাঠ এলাকায় নির্মীয়মাণ বাড়ির ভিতের জন্য গর্ত খুঁড়তে গিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যান ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা তিনটি জায়গায় বোমার টুকরোর দাগ পান। উদ্ধার হয় বোমার টুকরো। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, যে জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে, সেই জায়গায় ১৯৯০ সালে একটি একতলা বাড়ি তৈরি হয়। তার আগে সেখানে মাঠ ছিল। সম্ভবত আটের দশকেই ফাঁকা মাঠে প্রায় ৬ ফুট গর্ত খুঁড়ে সোনালি রঙের মোটা কৌটোয় লুকিয়ে রাখা হয় বিস্ফোরক। এর উপরই তখন একতলা বাড়ি তৈরি হয়েছিল। সেই বাড়ি প্রোমোটিংয়ে দেওয়ার পর গত কয়েক মাস আগে থেকে কাজ শুরু হয়।
সোমবার খুঁড়তে গিয়ে গর্ত থেকে সোনালি রঙের কৌটো উঠে আসে। কাছেই ছিলেন নির্মাণকাজের সুপারভাইজার, যিনি নিজেই এই ঘটনার অভিযোগকারী। ওই সোনালি কৌটো দেখে রীতিমতো বিস্মিত হন তাঁরা। ‘গুপ্তধন’ বলে মনে হয় তাঁদের। ভিতরে কোনও মূল্যবান জিনিস রয়েছে মনে করেই কোদাল দিয়ে আঘাত করা হয়। তাতেই ঘটে বিস্ফোরণ।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ৩৫ বছর আগে তৈরি ওই কৌটো বোমাটির সঙ্গে এখন তৈরি কৌটো বোমার বিস্তর ফারাক রয়েছে। বোমাটির বয়স কত, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা তা পরীক্ষা করে দেখছেন। এতদিন সেটি ফাটেনি। কিন্তু পুরনো বাড়িটি থাকার সময় যদি সেটি ফাটত, তার ফল মারাত্মক হতে পারত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.