অভিরূপ দাস: প্রদর্শনী শেষ হলেও থামছে না বিতর্ক। দক্ষিণ কলকাতার মিডলটন আর্ট গ্যালারিতে পদ্মভূষণ যামিনী রায়ের চল্লিশ ছবির প্রদর্শনী নিয়ে এবার অভিযোগ দায়ের হল থানায়। বুধবার শেক্সপিয়ার সরণী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গর্ভমেন্ট আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ ছত্রপতি দত্ত। শিল্পী অর্চি রায়, সৌমিক চক্রবর্তী, অঞ্জন সেন, পার্থপ্রতিম রায়, সপ্তর্ষী ঘোষ, তিমির ব্রহ্মরাও সই করেছেন সেই অভিযোগ পত্রে।
দক্ষিণ কলকাতার ১১ মিডিলটন রো-এর নিউ এশিয়াটিক ম্যানসনের সুইট নম্বর ৮ এ মিডলটন আর্ট গ্যালারিতে ১২ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শিল্পী যামিনী রায়ের চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেই প্রদর্শনী দেখতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয় শিল্পীদের। কেউ কেউ মোবাইলে ছবি তোলেন। এরপর যামিনী রায়ের আসল ছবির পাশে রাখতেই চোখ কপালে। যামিনী রায়ের মূল বৈশিষ্ট শেডলাইন। অর্থাৎ একটা লাইনের তলায় আরেকটা কম উজ্জ্বল একটু ছায়াঘন লাইন।
শিল্পীরা বলছেন, এই ছবিগুলোয় তেমন শেডলাইনের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এই ছবিগুলোয় শেডলাইনগুলো অদ্ভুতভাবে ঘন। যা মনের মধ্যে সংশয়ের জন্ম দেয়। যেখানে প্রদর্শনী চলছিল তা শেক্সপিয়ার থানার অর্ন্তগত। পুলিশের কাছে অভিযোগ পত্রে শিল্পীরা লিখেছেন, “এই থানার অর্ন্তভুক্ত এই প্রদর্শনী ঘিরে শিল্প গবেষক এবং শিল্পীদের মনে সন্দেহের তৈরি হয়েছে। ১৯৭২ সালের ন্যাশনাল আর্ট ট্রেজার অ্যাক্টের অধীনে শিল্পী যামিনী রায় দেশের একজন (নয়জন জাতীয় শিল্পীর মধ্যে) জাতীয় শিল্পী। তাঁর তৈরি করা শিল্পগুলি জাতীয় সম্পদ। জাতীয় শিল্পীর যেকোনও ধরণের অবমাননা আমাদের জাতীয় লজ্জা। ভারতের নাগরিক হিসেবে এই চিত্র প্রদর্শনীটি সমন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’
সূত্রের খবর, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বাঙালি প্রথিতযশা শিল্পীর কাজ নিয়ে এধরণের ছেলেখেলা! ক্ষুব্ধ বাঙালি জাতীয়বাদী সংগঠন জাতীয় বাংলা পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি ডা. অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, শুনেছি কমলকুমার নরোত্তমদাস পারেখ নামে এক অবাঙালি এই সমস্ত ছবির মালিক। বাঙালি শিল্পীর প্রচারে-প্রসারে অবাঙালিরা এগিয়ে আসলে তাঁকে স্বাগত জানাব। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে বাংলার সংস্কৃতিকে টাকার জোরে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বহিরাগতরা। অর্থের সঙ্গে সংস্কৃতিকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন কেউ কেউ। যামিনী রায় বাঙালির মননে। তাঁর শিল্প নিয়ে একজন অবাঙালি যেভাবে অবমাননা করেছেন তার প্রতিবাদে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বাঙালিদের গর্জে ওঠা উচিৎ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.