কলহার মুখোপাধ্যায়: মাইক বন্ধের নামে পুলিশের বিরুদ্ধে তাণ্ডবের অভিযোগ নিউটাউনে। বুধবার রাতে পাথরঘাটা গ্রামের একটি মন্দিরে ঢুকে পুলিশ ভাঙচুর চালিয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে মধ্যরাতে পথে নামেন গ্রামবাসীরা। যার জেরে বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে রইল রাস্তা। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। এই ঘটনায় অবিলম্বে বিভাগীয় তদন্ত ও দোষী পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। বিধায়কের হস্তক্ষেপে অবরোধ উঠে গেলেও, নিউটাউন থানার পুলিশের বিরুদ্ধে এখনও ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী।
[‘বিপত্নীক’ পরিচয় দিয়ে প্রেম, জানাজানির পর তরুণীকে হুমকি প্রতারকের স্ত্রীর]
ঠিক কী ঘটেছিল বুধবার রাতে? রাতে এলাকার বহু পুরনো একটি মন্দির মাইক বাজিয়ে হরিনাম সংকীর্তন হচ্ছিল। যেহেতু মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে, তাই হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে রাতেই ওই গ্রামে পুলিশ মাইক বন্ধ করতে যায়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দু’টি গাড়িতে পুলিশ এসে হরিনাম সংকীর্তন বন্ধ করতে বলে। তবে পুজোর নিয়ম অনুযায়ী, ঘট স্থাপন হওয়ার পর সংকীর্তন বন্ধ করা যায় না। তাই এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নেন, মাইক বন্ধ করে খালি গলায় সংকীর্তন করবেন তাঁরা। সংকীর্তন না থামিয়ে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খালি গলায় নাম সংকীর্তনেও আপত্তি তোলে পুলিশ। মন্দিরে রীতিমতো ভাঙচুর করা হয়। এমনকী, যে ঘট রেখে পুজো হচ্ছিল, সেটিও উলটে দেওয়া হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এলাকা ছাড়েন পুলিশকর্মীরা।
মন্দিরে ভাঙচুরের প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাত থেকে পাথরঘাটা বিষ্ণুপুর রোডে অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবরোধ চলে বৃহস্পতিবার সকাল ন’টা পর্যন্ত। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, আইন মেনে রাতে বাইক বাজানো বন্ধ করতে পারে পুলিশ। কিন্তু, কোনও ধর্মীয় রীতি বন্ধ করা যায় না। বৃহস্পতিবার সকালে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বাইকে চেপে ফের পাথুরঘাটা গ্রামে যান নিউটাউন থানার কয়েকজন পুলিশকর্মী। তাঁদের বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশের জিপকেও এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বেলার দিকে পাথরঘাটায় যান স্থানীয় বিধায়ক ও বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তাঁর মধ্যস্থতায় অবরোধ ওঠে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।নিউটাউনে মন্দিরে বাইক বাজানো নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তিনি বলেন, “এটি গ্রামের মেলা। ৫০-৬০ বছর ধরে হয়ে আসছে। পুলিশ মাইক বন্ধ করার জন্য ঠিক উদ্দেশ্যে নিয়েই গিয়েছিল। কিন্তু ঘট উলটে দেওয়ার যে অভিযোগ, তা যদি হয়ে থাকে, সেটা কোনওভাবেই ঠিক নয়। ঘটনাটি খারাপ দিকে মোড় নিতে পারত। আমি নিজেও দেখেছি যে ঘট উলটে রয়েছে, ফুলপত্র এদিক ওদিক ছড়িয়ে আছে। আমরা বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে বিধাননগর পুলিশও।
[ উঠে যাচ্ছে মেট্রোর সময় সূচি, এবার বসবে রিয়েল টাইম ইন্ডিকেটর]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.