Advertisement
Advertisement

Breaking News

Netaji memorial Sarala Punyashram

নেতাজির স্মৃতিধন্য সরলা পুণ্যাশ্রম দখল করে প্রোমোটিংয়ের চক্রান্ত! তদন্তে পুলিশ

ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।

Police investigating on Netaji memorial Sarala Punyashram case

কসবার এই সরলা পুণ্যাশ্রমে কুনজর পড়েছে প্রোমোটারের।

Published by: Subhankar Patra
  • Posted:April 11, 2025 1:23 pm
  • Updated:April 11, 2025 1:23 pm  

স্টাফ রিপোর্টার: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতিধন্য কসবার সরলা পুণ্যাশ্রম দখল করে প্রোমোটিং করার ছক নিয়ে তদন্তে নামল কলকাতা পুলিশ। শুধু তাই নয়, ওই আশ্রমের মহিলা আবাসিকদের মারধর করে বাসচ্যুত করার অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নেমেছে রাজ্য মহিলা কমিশন।

অভিযোগ নিয়ে ইতিমধ্যে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে রিপোর্ট তলব করেছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। কারণ, স্বয়ং নেতাজি উদ্যোগ নিয়ে তাঁর শিক্ষকের জন্য এই আশ্রমের জমি বরাদ্দ করেছিলেন। আশ্রমের মহিলা আবাসিক শুক্লা নাগ ও ছন্দা করদের অভিযোগ, দেশবরেণ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবী বীণা দাস পরিচালিত এই আশ্রমের জমি দখল করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রোমোটারদের দিয়ে বহুতল আবাসন তৈরির ছক কষছে। পরিকল্পনা করে একজন ভুয়া চ্যার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট মিথ্যা নথি তৈরি করে আশ্রমের অসহায় মহিলাদের উৎখাতের চেষ্টা করছে। বিষয়টি নিয়ে মহিলা কমিশনের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও আবেদন জানানো হচ্ছে বলে সরলা পুণ্যাশ্রমের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ গুহ জানিয়েছেন।

Advertisement

কসবার সরলা পুণ্যাশ্রমটি ১৯২৯ সালে তৈরি করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর শিক্ষক বেণীমাধব দাস। পরে স্বয়ং সুভাষচন্দ্রের উদ্যোগে কসবায় আশ্রমের জমির ব্যবস্থা হয়। পরবর্তীকালে আশ্রমটি আরও সম্প্রসারিত এবং বহুমুখী নানা প্রকল্প ও পরিকাঠামো গড়ে তোলেন বেণীমাধবের দুই কন্যা বীণা ও কল্যাণীদেবী। এরমধ্যে বীণা দাস বিপ্লবীদের সংস্পর্শে এসে স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে গুলিও করেছিলেন বীণাদেবী।

স্বভাবতই স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া সরলা পুণ্যাশ্রমে পরবর্তীকালে বাংলার বহু নামী প্রশাসক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এসেছেন। অসহায় প্রবীণ মহিলারা এই আশ্রমে বিনা খরচে এসে জীবনের শেষ দিনগুলি কাটান। এখনও বেশ কয়েকজন অসহায় মহিলা এখানে আবাসিক হিসাবে রয়েছেন। বস্তুত, সহায়-সম্বলহীন অসহায় মহিলাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশিই তাঁদের স্বনির্ভর করার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প এবং পরিষেবাও চালিয়ে আসছেন আশ্রম পরিচালন কমিটি। কিন্তু কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালে আশ্রমের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। আশ্রমের পরিচালন সমিতির তরফে অভিযোগ, ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাই এখন মহিলা আবাসিকদের বের করে দিয়ে ঘর দখল করে নিচ্ছে। জমিতে প্রোমোটারদের দিয়ে বহুতল তৈরি করতে চাইছে। একজন মিথ্যা পরিচয় দেওয়া চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ভুয়া নথি তৈরি করে আশ্রমটিকে দখল করতে চাইছেন বলে অভিযোগ করেন পরিচালন সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ গুহ। যদিও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “জমি দখলের বিষয়টি আইনি দিক। আমরা আশ্রমের মহিলা আবাসিকদের উপর অত্যাচার এবং মারধরের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। পুলিশকর্তারা আমাদের কাছে এসে জানিয়েছেন, বিস্তারিত তদন্ত করে তবেই জানাবেন।” তবে মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামী বীণা দাসের কর্মকাণ্ডের পুণ্যক্ষেত্রে সরলা পুণ্যাশ্রমের প্রোমোটারের শ্যেনদৃষ্টি পড়ায় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন যে উদ্বিগ্ন, তা তাঁর কথায় স্পষ্ট হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারাও দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সরলা পুণ্যাশ্রম বাঁচিয়ে রাখার লড়াইয়ে শামিল হচ্ছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement