সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গড়িয়াহাটের বৃদ্ধা খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই পুত্রবধূ, তার প্রেমিক এবং নাতনিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করেই ক্রমশ নানা তথ্য পাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের আগে ঘুমের ওষুধ মেশানো খাবার খাওয়ানো হয়েছিল বৃদ্ধা ঊর্মিলাকে। তারপরই প্রথমে শ্বাসরোধ এবং পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয় ওই বৃদ্ধাকে। এছাড়াও বৃদ্ধার পুত্রবধূ ডিম্পলের পাশাপাশি তার মেয়ে কণিকার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল সৌরভের।
গত বৃহস্পতিবার গরচা ফার্স্ট লেনের ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ঊর্মিলা ঝুন্ডের ক্ষতবিক্ষত দেহ। কে বা কারা খুনের ঘটনায় জড়িত, সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করা হয় বৃদ্ধাকে। তবে তাতে বাধা দিলে গলা, বুক এবং পেটে একাধিকবার কোপানো হয় তাঁকে। তলপেটও আড়াআড়িভাবে চিরে দেওয়া হয়। খুনের পর আলাদা করে দেওয়া হয় ধড় এবং মুণ্ড। প্রমাণ লোপাটের জন্য ঘটনাস্থল ভাল করে ধুয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু কে বা কারা এই খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা নিয়ে শুক্রবার সন্ধে পর্যন্ত ধন্দে ছিলেন তদন্তকারীরা।
তবে বৃদ্ধার পরিজনদের জেরা করে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হয়। সন্ধের পরই খোলে সমস্ত রহস্যের জট। পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিহতের পুত্রবধূ ডিম্পল এবং তার প্রেমিক ও মেয়ে কণিকাকে। তাদের জেরা করে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে ঠাকুমার অতিরিক্ত দাপুটে মেজাজ এবং সংসারে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠানের বিষয়টি নিয়ে বেশ বিরক্ত ছিল নাতনিরাও। যে কারণে মায়ের পরিকল্পনায় শামিল হয় বড় মেয়ে কণিকা ওরফে গুড়িয়া। কিন্তু কীভাবে এই ঘটনায় নিজেকে জড়িয়ে গেল ডিম্পলের প্রেমিক? জেরায় মা ও মেয়ে জানায়, শাশুড়িকে খুনের জন্য রীতিমতো চক্রান্ত করে পাঞ্জাব থেকে ডেকে আনা হয় সৌরভকে। ঘটনার রাতে প্রথমে নাতনি কণিকা ওরফে গুড়িয়া ঠাকুমাকে খাবার খাওয়ায়। তাতেই মিশিয়ে দেওয়া ছিল ঘুমের ওষুধ। তাই খাবার খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েন ঊর্মিলা জুন্ড। এরপরই ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢোকে ডিম্পল এবং তার প্রেমিক সৌরভ। প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বৃদ্ধাকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পেট আড়াআড়িভাবে চিরে দেওয়া হয়। সব শেষে ধড় এবং মুণ্ড আলাদা করে দেওয়া হয় তাঁর। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, শুধু পুত্রবধূ ডিম্পলই নয়। তার মেয়ে কণিকার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিশোরী কণিকার। আপাতত তিনজনকেই মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার ভাবনাচিন্তা করছেন তদন্তকারীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.