Advertisement
Advertisement

Breaking News

সিসিটিভি

সন্ধে থেকে সিঁড়ির তলায় লুকিয়ে খুনি, সিসিটিভিতেই নেতাজিনগর হত্যার রহস্য ফাঁস

কাটিহারের বারসোই থেকে কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত মূল অভিযুক্ত হামরুজ৷

Police get clue from the footage of 4 CCTVs on Netajinagar murder
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:August 6, 2019 9:25 am
  • Updated:August 6, 2019 9:25 am  

অর্ণব আইচ: রাত ন’টার আগে দরজা খোলাই ছিল। সন্ধের পরই পা টিপে দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে খুনি। গা ঢাকা দিয়ে ছিল সিঁড়ির তলায়। রাত ন’টা নাগাদ বৃদ্ধা নিচে নেমে এসে সদর দরজা বন্ধ করতেই তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আততায়ী। তাঁর গলায় পেঁচিয়ে দেয় শাড়ির পাড়।

[আরও পড়ুন: ফের বৃদ্ধার রহস্যমৃত্যুতে উদ্বিগ্ন পুলিশ, মঙ্গলবার জরুরি বৈঠক লালবাজারে]

নেতাজিনগরের অশোক অ্যাভিনিউয়ে বৃদ্ধ দিলীপ মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী বৃদ্ধা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়কে খুন করে বাড়ি লুটপাটের অভিযোগে বিহারের কাটিহার থেকে ধরা পড়েছে অভিযুক্ত হামরুজ আলম। তাকে ধরার জন্য নেতাজিনগর ও বাঁশদ্রোণী এলাকার অন্তত ২০টি সিসিটিভি ঘাঁটা হয়। তার মধ্যে চারটি সিসিটিভিতে হামরুজের চেহারা ধরা পড়ে। তাতেই অপরাধের কিনারা করতে সক্ষম হয় পুলিশ। যে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বাড়িতে একা থাকেন, তাঁদের উদ্দেশে পুলিশ আগেই পরামর্শ দিয়েছে, প্রয়োজন ছাড়া যেন তাঁরা বাইরের মূল দরজা বন্ধ করে রাখেন, যাতে কেউ সহজে বাড়িতে ঢুকতে না পারে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, কাটিহারের বারসোইয়ে ধৃত হামরুজের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা লুট যাওয়া ৭০ হাজার টাকার মধ্যে ৩৮ হাজার টাকা, রুপোর নুপূর ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃদ্ধার গলার হারটি হামরুজ স্ত্রীকে দিয়েছে। কিছু টাকা দিয়েছে ভাইকে। কলকাতায় সে মাস দু’য়েকের জন্য এসে মিস্ত্রির কাজ করে বাড়ি চলে যেত। কলকাতায় থাকার সময় একটি স্থানীয় সিমকার্ড ব্যবহার করত। সিমকার্ডের কাস্টমার অ্যাপ্লিকেশন ফর্ম থেকে তার ছবি জোগাড় করেন গোয়েন্দারা। এক চৌকিদারকে সঙ্গে নিয়ে বিকেলে পুলিশ তার বাড়িতে যায়। বেগতিক বুঝে পালায় তার স্ত্রী ও ভাই। গ্রামের বাসিন্দারা চৌকিদারকে জানান, হামরুজ বাজারে গিয়েছে। বাজার থেকেই গোয়েন্দারা তাকে ধরে ফেলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেপ্তারির করার সময় হতবাক হয়ে সে পালটা প্রশ্ন করে, “আপনারা এখানে এলেন কীভাবে?”

প্লাস্টার মিস্ত্রি হামরুজ এক ঠিকাদারের অধীনে কয়েকদিন মাত্র কাজ করেছিল এই বাড়িতে। ঠিকাদার তার পরিচয় জানতেন না। তাই তাকে ধরতেও অসুবিধা হয়। আরও ৬ জন রং ও প্লাস্টারের মিস্ত্রিকে জেরা করে তাকে শনাক্ত করা হয়। হামরুজ কাজ করার সময়ই দেখত, বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা আলমারি খুলে তাকে টাকা দিচ্ছেন। তখনই তার মাথায় লুটপাটের মতলব আসে। তার দাবি, সে এই অপরাধ একাই করেছে। যদিও মাস্টারমাইন্ড কেউ ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, কেউ ডাকার পর বৃদ্ধা দরজা খুলে দেন। হামরুজ পুলিশকে জানিয়েছে, সে পরপর তিনদিন সন্ধেবেলা সেই বাড়িতে গিয়ে রেইকি করে। বাঁশদ্রোণীর রেনিয়ার কাছে ভাড়া থাকত সে। খুনের দিন সন্ধ্যার পর মোবাইল ফোন বন্ধ করে সে এসে বাড়িতে ঢোকে। সিঁড়ির তলায় লুকোয়। বৃদ্ধাকে খুনের পর উপরে উঠে বৃদ্ধকে খুন করে। একের পর এক চাবি দিয়ে আলমারি খুলে টাকা বের করে। যদিও যে আলমারিতে প্রচুর টাকা ও গয়না ছিল, সেটির চাবি খুঁজে পায়নি সে।

[আরও পড়ুন: নিরাপত্তায় বাড়তি নজর, বউবাজারে প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক পুলিশের]

সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে, লুটপাটের পর ব্যাগ নিয়ে রাত ১১টা নাগাদ বের হয় সে। এর ৪০ মিনিট পর সে পৌঁছয় রেনিয়ায়। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোয়। পরের দিন দুপুরে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে। তাকে দেখে পরিচিতরাও সন্দেহ করেননি। সে মনে করেছিল, আর এই এলাকায় কাজের জন্য আসবে না। ধৃত ব্যক্তি জানিয়েছে, সে মদ্যপান করে ছিল। সে অনেকটাই বদমেজাজি। তার দাবি, হঠাৎই সে খুন করে ফেলে। যদিও তার দাবি যাচাই করা হচ্ছে। এই ঘটনার পিছনে কোনও মাস্টারমাইন্ড রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement