ছবি: প্রতীকী।
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হোটেলেই চলত মধুচক্র! গোপন সূত্রে এই অভিযোগ পায় হাওড়া সিটি পুলিশ। হোটেলে হানা দিয়ে মধুচক্রের আসরের পর্দাফাঁস। হাতেনাতে গ্রেপ্তার ৫ মহিলা-সহ ১২ জন। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
মধুচক্র চালানোর অভিযোগে ওই হোটেলের ম্যানেজার-সহ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলাকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ।
গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে আচমকাই হাওড়ার শিবপুরের নবান্ন বাসস্ট্যান্ডের কাছে শরৎ চ্যাটার্জি রোডের একটি হোটেলে হানা দেয় বিশাল পুলিশবাহিনী। শিবপুর থানা ও হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা ছিলেন ওই দলে। ওই হোটেল থেকে ৫ মহিলা ও ৬ জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। হোটেল ম্যানেজারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কতদিন ধরে তারা ওই হোটেলে মধুচক্র চালাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মধুচক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, শহর ও শহরতলিতে মানবপাচারের ঘটনা না হলেও প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এখনও এই চক্র সক্রিয় রয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরীদের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে কলকাতায় নিয়ে এসে যৌন ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছে পাচারকারীরা। মূলত উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত লাগোয়া এলাকা বসিরহাট, বনগাঁ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন, ক্যানিং, কাকদ্বীপের মতো প্রত্যন্ত এলাকাগুলি পাচারকারীদের টার্গেট। উত্তরবঙ্গ সীমান্ত এলাকা থেকেও নাবালিকাদের নিয়ে আসা হচ্ছে। প্রতিবেশী বাংলাদেশের সঙ্গেও এ দেশের একটা বড় চক্র কাজ করছে। সেখান থেকে কিশোরীদের বিক্রি করে এখানে পাঠানো হচ্ছে। কলকাতায় কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁদের নিয়ে আসা হচ্ছে।
তবে এখন আর পাচার হয়ে আসা সব কিশোরীদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করা হচ্ছে না। সাধারণত পাচার হয়ে আসা মহিলাদের জায়াগা হত সোনাগাছির মতো এলাকায়। তাই গোয়েন্দাদের নজর থাকত রেড লাইট এলাকাগুলিতে। লালবাজার গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আগে পাচারকারীরা মেয়েদের নিয়ে এসে যৌনপল্লিতে বিক্রি করত। ফলে অভিযোগ এলে পাচার হয়ে আসা মেয়েদের উদ্ধারকাজ সুবিধা হত। এখন অবশ্য পাচারকারীরা কিশোরীদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করছে না। তাঁদের অসাধু লোকজনের হাতে তুলে দিচ্ছে। তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ওইসব কিশোরীদের দিয়ে মধুচক্র ব্যবসা চালাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.