অর্ণব আইচ: মন্দিরে চুরি যাওয়া গয়না বাড়িতে তল্লাশি করতে এসে না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরছিলেন পুলিশকর্মীরা। হঠাৎ করেই ছাগলের ঘর থেকে উদ্ধার চুরি হওয়া গয়না। ঘটনাটি উত্তর বন্দর থানার জোড়াবাগানের। নিমতলা ঘাটের কাছে ভূতনাথ মন্দিরের ভিতর থেকে গয়না চুরির তদন্ত করছিলেন পুলিশ আধিকারিকরা। বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার সময় ছাগলের ডাক শুনে হঠাৎ সন্দেহ হয়েছিল। খুঁটিতে সাতটি ছাগল বাঁধা ছিল। খোঁয়াড়ের ভিতর ভুসি, চটের বস্তা অনেক কিছুই ছিল। হঠাৎ খুঁটি ধরে টানতেই ধাতব শব্দ কানে আসে। ফের হালকা ঝনঝন শব্দ হতেই খুঁটিটি তুলে ফেললেন উত্তর বন্দর থানার আধিকারিকরা। খুঁটির ভিতরের ফাঁপা অংশ থেকেই বেরিয়ে এল কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না। গ্রেপ্তার করা হয় সুরজ পাশোয়ান নামে এক ব্যক্তিকে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে ভূতনাথ মন্দিরে পুজো দিতে যান শহরের এক গয়না ব্যবসায়ী। ‘নিরাভরণ’ অবস্থায় পুজো দিতে শুরু করেন তিনি। তাই পাশেই খুলে রাখেন তাঁর গলা থেকে সোনার মাদুলি—সহ চেন ও রুদ্রাক্ষের মালা। সোনার চেনে জোড়া রুদ্রাক্ষ ছিল। মাঝখানে মন্ত্র লেখা সোনার মৃত্যুঞ্জয় কবচ। ব্যবসায়ী পুজো সেরে চোখ খুলেই দেখেন দু’টি গয়নাই উধাও। তাঁর মাথায় হাত। পুরোহিতও কিছু বলতে পারছেন না। তাড়াতাড়ি গর্ভগৃহের বাইরে আসেন ব্যবসায়ী। তাতেও সুরাহা হয়নি। মন্দির কর্তৃপক্ষও কোন দায়িত্ব নিতে চায়নি। কারণ, মন্দিরে নোটিসই দেওয়া ছিল, জিনিসপত্র নিজের দায়িত্বে রাখতে হবে। শেষ পর্যন্ত উত্তর বন্দর থানায় অভিযোগ জানান ওই ব্যবসায়ী। অভিযোগের ভিত্তিতে উত্তর বন্দর থানার ওসি পার্থ মুখোপাধ্যায়ের তত্বাবধানে একটি টিম তদন্ত শুরু করে।
মন্দিরের গর্ভগৃহের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই একজনের ছবি মেলে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে, ওই ব্যক্তি সুরজ পাশোয়ান। বাড়ি জোড়াবাগানে। বুধবার রাতে তার বাড়িতেই হানা দেয় পুলিশ। চুরির বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করে সুরজ। তাই তার সামনেই তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। আধিকারিকরা ভাবতেও পারেননি যে, এভাবে ছাগলের খোঁয়াড়ে ফাঁপা খুঁটির মধ্যে গয়না থাকবে। এর আগে কোন কোন ঘটনায় সুরজের হাত আছে, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.