ছবি: প্রতীকী
অর্ণব আইচ: ‘নেশাগ্রস্ত’ (Drunk) জামাইকে অহেতুক খরচ করায় বাধা দিয়েছিলেন শ্বশুর ও শাশুড়ি। এই নিয়ে জামাইয়ের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির গোলমাল। তারই জেরে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে শ্বশুরের গলায় কোপ জামাইয়ের। নৃশংসভাবে ছুরি দিয়ে আঘাত করে শ্বশুরকে খুনের চেষ্টা করল জামাই। আহত ওই ব্যক্তি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্মী। শাশুড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পাপ্পুকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট (Amharst Street) থানার পুলিশ। রবিবার পাপ্পুকে ব্যাংকশাল আদালতে তোলা হলে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, আট বছর আগে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা মহিলা ললিতা দাসের মেয়ে রানির সঙ্গে ওই এলাকারই বাসিন্দা পাপ্পু দাসের বিয়ে হয়। প্রথমে রাজা রামমোহন রায় সরণির একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে জামাই তাঁর মেয়েকে নিয়ে থাকতে শুরু করে। ওই দম্পতির তিন ছেলে রয়েছে। ছোট ছেলের বয়স সাত মাস। মহিলার অভিযোগ, তাংর জামাই পাপ্পু বিশেষ কোনও কাজ করে না। সারাদিনই নেশা করে থাকে। এই ব্যাপারে তাঁর মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের গোলমাল লেগেই থাকত। সময়মতো ভাড়া না দেওয়ায় বাড়িওয়ালার সঙ্গে ভাড়াটের গোলমাল হয়।
এরপর স্ত্রী ও ছেলেদের নিয়ে কলকাতা ছেড়ে গিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভাড়া থাকতে শুরু করে সে। কিন্তু সেখানেও পাপ্পু একই ধরনের সমস্যা তৈরি করে। ভাড়া না দেওয়ায় সেখানেও বাড়িওয়ালার সঙ্গে তার গোলমাল হয়। তখন শ্বশুর ও শাশুড়ি জামাইকে বোঝান, সে যেন নেশার পিছনে টাকা খরচ না করে ছেলেদের জন্য খরচ করে। কিন্তু কর্ণপাত করেনি জামাই। এক সপ্তাহ আগে ললিতা দাসের মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের ফের গোলমাল হয়। তারই জেরে স্ত্রী ও তিন ছেলেকে পাপ্পু শ্বশুরবাড়িতে রেখে আসে। এই ব্যাপারে শ্বশুর ও শাশুড়ি জামাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জামাই এই ব্যাপারে কর্ণপাত করেনি।
ললিতা দাসের অভিযোগ, শনিবার বিকেলে তাঁর স্বামী বাড়িতে বসে খাচ্ছিলেন। হঠাৎই জামাই ঘরের ভিতর ঢুকে যায়। শ্বশুরের সঙ্গে বচসা শুরু হয় জামাইয়ের। শ্বশুরকে খুনের হুমকি দিতে থাকে জামাই। হঠাৎই সে ছুরি বের করে শ্বশুরের গলায় ধরে। স্বামীকে বাঁচাতে তিনি এগিয়ে যান। তখনই স্বামী সঞ্জয় দাসের গলা ছুরি দিয়ে কেটে দেয় জামাই। ওই ব্যক্তির গলা থেকে রক্তপাত হতে শুরু করে। জামাই রক্তাক্ত অবস্থায় শ্বশুরকে টানতে টানতে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে। ফের তাঁর গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে সে। ললিতা দাস চিৎকার করে উঠলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। বেগতিক বুঝে পাপ্পু পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই হাসপাতালেরই কর্মী তিনি। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। এই ব্যাপারে ললিতা দাস পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পর তদন্ত শুরু হয়। পলাতক জামাই পাপ্পু দাসকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.