সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের দেড়শো বছর পূর্তির অনুষ্ঠান। আপাতদৃষ্টিতে এটি পুরোপুরি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। বিশেষ করে যেখানে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী একসঙ্গে আমন্ত্রিত। কিন্তু, এ হেন অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চই একপ্রকার রাজনৈতিক বক্তব্য রাখার মঞ্চ হয়ে উঠল। প্রথমত. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা থাকলেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তিনি গেলেন না। দ্বিতীয়ত, প্রধানমন্ত্রী নিজে পোর্ট ট্রাস্টের অনুষ্ঠানে সুকৌশলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উন্নয়নের পরিপন্থী এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে সিন্ডিকেটের দল বলে কটাক্ষ করে গেলেন।
মমতার অনুপস্থিতিতে মোদি আরেকটু সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁকে কটাক্ষ করার। খানিকটা ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার মতো খোলাখুলিই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। মমতার নাম না নিলেও তাঁর লক্ষ্য যে তৃণমূল সুপ্রিমোর দিকেই ছিল, তা বুঝতে হলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি এবং আয়ুষ্মান ভারত যোজনা এ রাজ্যে লাগু না করায় মমতাকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন মোদি। তাঁর কথায়, “যে সমস্ত প্রকল্পে ভাগ-বাটোয়ারা নেই, সিন্ডিকেট নেই। সেসব প্রকল্প কেনই বা চালু করবেন। আমার মনে সবসময় ব্যথা থাকবে। আমি ব্যাথিত যে বাংলার মানুষ এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব, যে বাংলার নীতি নির্ধারকদের সদবুদ্ধি দিন। এবং আমার বাংলার কৃষক ভাইয়েরা, গরিব মানুষেরা এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পাক।”
এমনিতেই সোনিয়াকে প্রত্যাখ্যান করে মোদির সঙ্গে বৈঠক করে সিএএ ইস্যুতে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার উপর আবার বন্দরের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগেই বেলুড় মঠে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মমতাকে নাম না করে কটাক্ষ করেছেন মোদি। অন্যদিকে বাম-কংগ্রেস যথারীতি নেতাজি ইন্ডোরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে। ফলে চাপ বাড়ছিল মমতার উপর। তারপরই নেতাজি ইন্ডোরে অনুপস্থিত থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেকে বলছেন, সিএএ বিরোধী অবস্থান আরও একবার মনে করিয়ে দিতেই এদিন অনুপস্থিতি থাকলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই সুযোগে মোদি তাঁকে আরও একটু ব্যাকফুটে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে গেলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.