স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনি ও রবিবার একাধিক সরকারি অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি। সন্ধ্যায় হাওড়া ব্রিজের সৌন্দর্যায়নের অনুষ্ঠানে মিলেনিয়াম পার্কে তাঁর সঙ্গে একমঞ্চে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগেই রাজভবনে দু’জনের একান্তে বৈঠকও হবে। রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে কলকাতা বন্দরের ১৫০ বছর উপলক্ষে অনুষ্ঠানেও মোদি-মমতা থাকবেন এক মঞ্চে।
প্রথমে ঠিক ছিল কলকাতা বিমানবন্দর থেকে সড়কপথেই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হবে রাজভবনে। কিন্তু পরে ঠিক হয় হেলিকপ্টারে রেসকোর্সে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। তাই বিকেল পাঁচটার পরিবর্তে দুপুর সাড়ে তিনটেয় নামছে প্রধানমন্ত্রীর বিমান। দেশজুড়ে এনআরসি, সিএএ ইস্যুতে বিক্ষোভের আবহে তাঁর এই রাজ্যে পা রাখা, যা কিনা এই আন্দোলনের ভরকেন্দ্র। ফলে এই সফর ঘিরে দেশজুড়ে আগ্রহ তুঙ্গে। তাঁর দু’দিনের কর্মসূচিতে যাতায়াতের সময় বেশ কিছু সংগঠন বিক্ষোভ দেখাবে বলে ঠিক আছে। তাই নিরাপত্তার আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। শুক্রবার অসমে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। সেখান থেকে শনিবার তাঁর কলকাতায় আসার কথা ছিল। কিন্তু অসমে সিএএ পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর অফিস সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেনি।
দমদম বিমানবন্দরে মোদিকে স্বাগত জানাবেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখান থেকে কপ্টারে রেসকোর্সে নেমে প্রধানমন্ত্রী যাবেন রাজভবনে। সেখানে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হবে। এরপর বিবাদী বাগে কারেন্সি বিল্ডিংয়ে সংস্কার করা ঐতিহ্যবাহী ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং, বেলভেদর হাউস, মেটকাফে হাউস এবং ভিক্টোরিয়া হলের দরজা সাধারণের জন্য খুলে দেবেন তিনি। তারপর যাবেন গঙ্গা পাড়ে মিলেনিয়াম পার্কে। সেখান থেকে উদ্বোধন করবেন হাওড়া ব্রিজের লাইট অ্যান্ড সাউন্ড-সহ সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প। এই অনুষ্ঠানে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীও। তারপর বিশেষ জলযানে বেলুড় মঠে গিয়ে কিছু সময় কাটিয়ে রাতে লঞ্চেই রাজভবনে ফিরবেন মোদি। রাজভবনেই তাঁর সঙ্গে যাতে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেন, তাই সময় চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে নবান্নে যোগাযোগ করা হয়। জানা গিয়েছে, বিকেলে প্রধানমন্ত্রী রাজভবনে পৌঁছনোর পরই দু’জনের বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের জন্য বুলবুলে ক্ষতি বাবদ বরাদ্দসহ বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে কথা বলতে পারেন। তিনি আগেই দাবি করেছিলেন, কেন্দ্র এনআরসি এবং সিএএ-র সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুক। কারণ দেশের মানুষ এটা চাইছে না। শনিবারও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি প্রসঙ্গটি তুলে দেশের মানুষের মনোভাব বিবেচনা করে ওই সিদ্ধান্ত থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে সরে আসতে বলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রাতে রাজভবনেই কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী। পরদিন রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে কলকাতা বন্দরের ১৫০ বছরে পদার্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন মোদি। জাহাজমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে থাকার কথা মমতারও। আমন্ত্রিত রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। জাহাজমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য দু’দিনই থাকছেন কলকাতায়। নেতাজি ইন্ডোর থেকে রেসকোর্স হয়েই দিল্লি ফিরবেন মোদি। তাঁর দু’দিনের সফর ঘিরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হয়েছে যথেষ্ট। এমনকী, অনুষ্ঠানগুলিতে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতেও রাশ টানা হয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর, একাধিক জায়গায় এনআরসি ইস্যুতে তাঁর যাত্রাপথে বিক্ষোভ দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছে বামপন্থী ও অন্য কিছু সংগঠন। বিশেষ করে ভিআইপি রোডেই রাস্তার দু’পাশে কালো পতাকা দেখানোর কথা ছিল তাদের। বিমানবন্দরের অদূরে কৈখালিতে জমায়েতের ডাক দিয়েছে বামপন্থীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে দমদম থেকে কপ্টারেই রেসকোর্স যাচ্ছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.