সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “সন্তান হারানোর বেদনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) বোঝেন না। নিজের সন্তান থাকলে হয়তো বুঝতেন।” কাতর স্বরে কথাগুলি বলছিলেন ৯০ বছরের আসমা খাতুন। গোটা দেশ যাঁকে চেনে ‘শাহিনবাগের দাদি’ নামে। তাঁর কাঁপা গলায় যে দৃঢ়তা আছে, সেই দৃঢ়তা এবং মানসিক শক্তিকে পুঁজি করেই দিল্লির শাহিনবাগে আড়াই মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কয়েক হাজার মহিলা। দেশের বিভিন্ন শহরে আরও অনেক শাহিনবাগের জন্ম হয়েছে। দিল্লির হিংসায় ব্যাথিত সেই আসমা খাতুনও। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের শান্তি বজায় রাখতে আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।
শুক্রবার কলকাতার শাহিনবাগ অর্থাৎ পার্ক সার্কাসে এসেছিলেন আসমা খাতুন। সেখানে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের জমায়েতে তিনি বলেন, “আমরা বিরিয়ানির লোভে এক জায়গায় জড়ো হইনি। আমাদের এই ধরনের হিংসায় জড়িয়ে পড়া উচিত নয়। এতে আমাদের আন্দোলন দুর্বল হবে। কোনও প্রভাবই পড়বে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সন্তান হারানোর বেদনা বোঝেন না। হয়তো ওঁর নিজের সন্তান থাকলে বুঝতেন।” অমিত শাহর সঙ্গে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের বৈঠক প্রসঙ্গে দাদি বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের ২০ জনকে দেখা করতে বলেছেন। কিন্তু, আমি ওঁকে বলতে চাই, আমরা একলক্ষ জন আছি। আপনি যেখানে বলবেন সেখানে দেখা করতে রাজি।” শাহিনবাগের ‘দাদি’র সঙ্গে পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভে শামিল হন গান্ধীজির প্রপৌত্র তুষার গান্ধীও। তিনি বলেন, “বিক্ষোভকারীদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত। আর কোনওরকম প্ররোচনা দেওয়া উচিত নয়।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তুষার গান্ধী বলেন, “আপনারা ভাগ্যবান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী। ওঁরা মমতাকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করবে। আপনারা দয়া করে ওঁকে সমর্থন করুন।”
উল্লেখ্য, গত এক সপ্তাহে দিল্লিতে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ৪৩ জনের। আহত শতাধিক। এদের মধ্যে বহু মানুষ গুরুতর আহত। নিখোঁজের সংখ্যাটা মৃত্যুর চেয়েও বেশি। কোথাও স্ত্রী তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন। কোথাও শিশু হারিয়েছে তাঁর বাবা-মা’কে। কোথাও খালি হয়েছে মায়ের কোল। সন্তান হারানোর এই বেদনা কি আদৌ শাসক বোঝে? শাহিনবাহ বলছে, ‘না’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.