কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: আইসোলেশন অথবা কোয়ারেন্টাইন এড়াতে জ্বর বা শ্বাসকষ্ট গোপন করে নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছেন। শুধু তাইই নয়, একজন এভাবে গোপন করেত গিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সমস্যায় ফেলছেন। এভাবেই কার্যত বিপদ বাড়ছে গোটা সমাজে। সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত এমনই।
উত্তর শহরতলির সল্টলেক বা দমদমে যে ক’জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে, তাঁদের অনেকেই প্রাথমিকভাবে জ্বরের উপসর্গ চেপে গিয়েছিলেন। চিকিৎসককে বলেননি যে তাঁর জ্বর এসেছিল বা শ্বাসকষ্ট ছিল। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতির ফলে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে চিকিৎসা শুরু করতে। দত্তাবাদের করোনা সন্দেহভাজন, GC ব্লকের আক্রান্ত ব্যক্তি বা AD ব্লকের আক্রান্ত ও বর্তমানে সুস্থ ব্যক্তি, এই তিনজনই জ্বর কমানোর ওষুধ খেয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। ভরতি হতে দেরিও করেছেন। একই ঘটনা দেখা গিয়েছে দমদমেও।
শনিবার দমদমের একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বিরাটির পরেশ ঘোষ। তিনি শরীরে জ্বরের লক্ষ্মণ টের পাওয়া মাত্র ভরতি হয়েছিলেন হাসপাতালে। চিকিৎসার পর এখন তিনি সুস্থ। ওই হাসপাতালের সিইও নিবেদিতা চট্টোপাধ্যায় জ্বর গোপন করার প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, “অনেকে ওষুধ খেয়ে জ্বর গোপন করে ভরতি হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের জেনারেল বেডে রাখা হচ্ছে। তারপর ওষুধের প্রভাব কেটে যাওয়ার ১২ ঘন্টা পর শরীরের তাপমাত্রা দেখা দিচ্ছে। আমরা করোনা টেস্টের জন্য জন্য নমুনা নিচ্ছি এবং তাদের আইসোলেশনও পাঠাচ্ছি। কিন্তু ততক্ষণে বিপদ যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। জেনারেল বেডে অন্য রোগীর সংস্পর্শে চলে আসছেন তিনি।”
এই প্রবণতা আটকাতে নিবেদিতাদেবী মানুষকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, “জ্বর বা অন্যান্য উপসর্গ গোপন করবেন না। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করালে করোনা দূর করতে সময় লাগবে না।”
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ সদস্য প্রণয়কুমার রায় জানিয়েছেন, “জ্বর বা শ্বাসকষ্টজনিত উপসর্গ দেখা দিলে পুরনিগমের সঙ্গে যোগাযোগ করুন । দেরি করবেন না। তাতে নিজেরও ক্ষতি, সমাজেরও ক্ষতি।” এই দুই পুরসভা অঞ্চলে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, যা অনভিপ্রেত। জ্বর দেখা দেওয়ার পর করোনা উপসর্গ রয়েছে এই সন্দেহে কোনও পড়শির পাড়া-প্রতিবেশীরা অতি সক্রিয়তা দেখিয়ে ফোন করে বসেছেন পুলিশকে। যা নিয়ে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল বাগুইআটি রেল পুকুর কেষ্টপুর ও তেঘরিয়াতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.