Advertisement
Advertisement
Kolkata

ভুতুড়ে হাসি, গান! ওয়াটগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের পর বাড়ি ঘিরে দানা বাঁধছে আতঙ্ক

যে বাড়িতে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেই বাড়িতে কীর্তি কে ঘটাচ্ছে? পুলিশের দ্বারস্থ প্রতিবেশীরা।

People of the area Watganj where pieces of deadbody of woman recovered are panicked of ghost
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 6, 2024 12:17 am
  • Updated:April 6, 2024 9:11 am  

অর্ণব আইচ: গভীর রাতে ওয়াটগঞ্জের (Watganj) ‘খুনে’ বাড়ির ভিতর থেকে ভুতুড়ে গান! দুহাতে জানালার শিক ধরে পাড়ার লোকেদের দিকে চেয়ে ভুতুড়ে হাসি! কখনও বা ঠাকুরঘর থেকে ভেসে আসছে ‘জান্তব চিৎকার’! কলকাতার (Kolkata) হেমচন্দ্র স্ট্রিটের এই বাড়িটির দোতলায় গৃহবধূ দুর্গা সরখেলকে খুন করে দেহটি খণ্ড খণ্ড করে বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তাই সন্ধ‌্যার পর ওই বাড়ির জানালার দিকে তাকাতে ভয় পাচ্ছেন (Panic) বাসিন্দারা। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আবর্জনা ফেলতে এসে এক প্রৌঢ়া ওই বাড়িটির দোতলার জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে আপন মনে ‘ভুতুড়ে’ (Ghost) গান গাইতে দেখেন এক মহিলাকে। তাঁর আর্তনাদে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। জানা যায়, এই কীর্তি নিহত দুর্গার মানসিক ভারসাম‌্যহীন নির্বিকার ননদের। লোকেদের ভয় দেখিয়ে তিনি হেসে চলেছেন। পাড়ার লোকেদের দাবি, সারাক্ষণ যেন ওই দোতলার জানালা বন্ধ করা থাকে। তাঁরা ওয়াটগঞ্জ থানারও হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

গত মঙ্গলবার সিআইএসএফের (CISF) পরিত‌্যক্ত ব‌্যারাক থেকে উদ্ধার হয় কালো পলিথিনে মোড়া দেহের তিনটি অংশ। অভিযুক্ত ভাসুর শুদ্ধ নীলাঞ্জন সরখেলকে গ্রেপ্তারির পর জেরা ও সিসিটিভির সূত্র ধরে শুক্রবার বিকেলে চটকল ঘাটের কাছে একটি ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে রাখা কালো রঙের পলিথিন প‌্যাকেট থেকে উদ্ধার হয় দুর্গার দেহের বাকি অংশ। মঙ্গলবার ভোরে সাইকেল করে দ্বিতীয় দফায় এই দেহাংশ নীলাঞ্জন নির্জন চটকল ঘাটের কাছে ফেলে আসে। এদিন গৃহবধূর দু’টি হাত, নিম্নাঙ্গ, পায়ের পাতা উদ্ধার হয়। দেহাংশের ময়নাতদন্তের (Post Mortem) পরই স্পষ্ট হবে যে, তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কি না। সেই সাইকেল, দেহাংশ ফেলার জন‌্য সাদা ব‌্যাগ, দেহ কাটার জন‌্য রক্তাক্ত করাত উদ্ধার হয়েছে। তবে পুলিশের মতে, বাড়ির ঠাকুরঘরেই লুকিয়ে রয়েছে রহস‌্য।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আইনজীবীদের কর্মবিরতিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত আদালত, গণ্ডগোলে অসুস্থ বিচারক, ভর্তি হাসপাতালে]

লালবাজার জানিয়েছে, ঠাকুরঘর লাগোয়া ঘরের ভিতর খুন করে সে। ফলে খুনের পিছনে তন্ত্রসাধনার তত্ত্বকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, ভাইয়ের স্ত্রীকে মদ‌্যপান (Drink) করানোর পর গলা কেটে খুন করে ঠাকুরঘরে কয়েকটি প্রতিমা ও ছবির সামনে তন্ত্রসাধনায় বসেছিল নীলাঞ্জন। প্রক্রিয়া শেষের পর সে একটি করাত দিয়ে দেহ কেটে খন্ডিত করে। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের কাছে নীলাঞ্জন বলেছে, ‘‘আমি কিছুই করিনি।’’ এমনকী, শবসাধনা করেছিল কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে শুক্রবার দুপুরে দোতলায় ঠাকুরঘরে গিয়ে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালান ফরেনসিকের ডিএনএ (DNA) বিভাগের বিশেষজ্ঞ ও লালবাজারের গোয়েন্দারা। ঠাকুরঘর থেকে রক্তের ছাপ মেলেনি। কিন্তু ঠাকুরঘর লাগোয়া ঘরের মেঝে, বাথরুমের দরজা, প‌্যাকিং বাক্স, সিমেন্টের থলে, বেসিন, পাশে হাতমুখ ধোয়ার জায়গায় রয়েছে রক্তের ফোঁটা। রক্তমাখা একটি জামা, রক্ত মোছার জন‌্য কাপড়, কিছু স্ক্রু ড্রাইভার, বাটালির মতো যন্ত্রপাতিও নীলাঞ্জনের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে। ঠাকুরঘরের তাকে সন্ধান মিলেছে একটি ধারালো দা-এর। তবে এটি খুনের অস্ত্র কি না, তা নিয়ে চলছে তদন্ত।

[আরও পড়ুন: নাবালিকার বিয়ে রুখলেন শিক্ষিকারা, শান্তিপুরে নজির কন্যাশ্রী ক্লাবের]

খুন ও দেহ লোপাটের বিষয়টি বাড়ির অন‌্য কেউ জানতেন কি না, তা জানতে দুর্গার স্বামী-সহ অন‌্যদের জেরা চলছে। ঘটনার দিন দুর্গার কিশোর ছেলে, মা, বোনকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল বলে সন্দেহ। যদিও কোনও ওষুধের পাতা মেলেনি। রিহ‌্যাব (Rehab) থেকে এসে নীলাঞ্জনের পকেট থেকে পাঁচ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে পালান তার ভাই তথা দুর্গার স্বামী। সেই টাকা বাপের বাড়ি থেকে আদায় করে আসার পর রাতে দুর্গা আর ঘুমানোর সুযোগও পাননি। তাঁর কাটা মুণ্ডুর কপালে থাকা লাল টিপ তার প্রমাণ বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement