Advertisement
Advertisement
মোটা টাকা পেলে খোরপোশে ইতি

এককালীন মোটা টাকা পেলেই খোরপোশে ইতি, বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলার নতুন ট্রেন্ড

গত ক’দিনে কলকাতা হাই কোর্টে এভাবে সম্পর্কে ইতি টেনেছেন অন্তত তিন দম্পতি।

People getting one time hefty sum they aren't interested in lifetime alimony.
Published by: Paramita Paul
  • Posted:December 23, 2019 9:55 am
  • Updated:December 23, 2019 8:23 pm  

শুভঙ্কর বসু: বেশ কিছুদিন আগেই সম্পর্কে দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে বরাবরের মতো। তার পরেও ফি মাসে প্রাক্তন স্বামীর খোরপোশের টাকা যেন সেই তেতো সম্পর্ককেই মনে করিয়ে দেয়। সুতো পুরোপুরি ছিঁড়ে গেলেও কোনও এক অদৃশ্য টানে যেন ঝুলে থাকে। এই আবেগজনিত সমস্যা তো আছেই। তার উপর রয়েছে ঘোর বাস্তব একটি সমস্যা। প্রাক্তন স্বামী মারা গেলে কী হবে? নিজের ভরণপোষণ চলবে কী করে?  

এমন সাত-সতেরো ভাবনা থেকে বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে এখন এককালীন খোরপোশের মাধ্যমে পাকাপাকি সম্পর্ক ছেদের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত ক’দিনে কলকাতা হাই কোর্টে এককালীন খোরপোশ নিয়ে পাকাপাকি সম্পর্কে ইতি টেনেছেন অন্তত তিন দম্পতি। একই পথে চিরতরে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলতে মামলা করেছেন আরও অনেকে। 

Advertisement

[আরও পড়ুন : ফের দিল্লির কিরারি এলাকায় আগুন, কাপড়ের গুদামে অগ্নিদগ্ধ ৯]

ফি মাসে খোরপোশের বদলে প্রাক্তন স্বামীর কাছে কুড়ি লক্ষ টাকা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উত্তর কলকাতার বাসিন্দা বছর ছাব্বিশের জয়িতা দাস। বছর কয়েক আগে প্রমোদকুমার দাসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বেশ ক’বছর প্রেমের পর বিয়ে। কিন্তু একটু সময় গড়াতেই নানা বিবাদে বিষাক্ত হয়ে ওঠে সেই মধুর সম্পর্ক। শেষমেশ সম্পর্কের বাঁধন থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে চান দু’জনই। কিন্তু মাসে মাসে খোরপোশ নয়। আজীবন খোরপোশ হিসাবে এককালীন কুড়ি লক্ষ টাকা নিয়ে বিচ্ছেদ চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন জয়িতা। বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন বেঞ্চে নিজেই সওয়াল করেন। প্রমোদ আদালতে জানান, কুড়ি লক্ষ টাকা দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই। বিস্তর বাদানুবাদের পর অবশেষে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় রফা হয়। জয়িতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা জমা দিয়ে চিরতরে সম্পর্ক ছেদের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।

[আরও পড়ুন : ঝাড়খণ্ডের রায় LIVE: ফের কামব্যাক বিরোধী জোটের, সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছে কংগ্রেস-জেএমএম]

শুধু জয়িতা নন। আজীবন খোরপোশ বাবদ স্বামী মানস ভুঁইয়ার কাছে ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা বছর ত্রিশের অনুরূপা জানা। মানসবাবু সচ্ছল ব্যক্তি। প্রথমটা গাঁইগুঁই করলেও পরে প্রাক্তন স্ত্রীর প্রস্তাবে রাজি হয়ে ৩০ লক্ষ টাকায় রফা করে নেন। মানসবাবুকে দু’টি কিস্তিতে টাকা চুকিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। শুধু মেয়েরা নন। এককালীন টাকা দিয়ে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলতে চাইছেন অনেক পুরুষও। যেমন উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের হারান শিকদার। স্ত্রী ও কন্যার খোরপোশ বাবদ এককালীন টাকা দিয়ে সম্পর্কের ইতি চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। 

[আরও পড়ুন : বৃষ্টির পূর্বাভাস, স্যাঁতসেঁতে হাওয়ায় ভর করে আস্তিন গোটাচ্ছে শীত]

সম্প্রতি বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাক্তন স্বামীর প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন স্ত্রী নমিতা দেবী। স্ত্রী ও মেয়ের খরচ বাবদ মোট ২২ লক্ষ টাকা দিতে হবে হারানবাবুকে। মেয়ের এককালীন খরচ বাবদ ১৪ লক্ষ, এবং স্ত্রীর খরচ বাবদ আট লক্ষ টাকার চেক বা ব্যাঙ্ক ড্রাফট নিয়ে তাঁকে আদালতে আসার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এখানেই শেষ নয়। এককালীন খোরপোশের মাধ্যমে সম্পর্কে ইতি চেয়ে হাই কোর্টে একাধিক মামলা জমা হয়েছে, যেগুলির নিষ্পত্তি বাকি। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement