অর্ণব আইচ: কুড়ি টাকার স্ন্যাকসের প্যাকেট আর পাঁচ টাকার চায়েই চাঙ্গা শহরের ‘নাকা’। লকডাউনে সারাদিন পরিশ্রমের পর এই দামেই লালবাজার থেকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় নাকার দায়িত্বে থাকা পুলিশের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে খাবার। আবার বেশ কিছু শহরবাসী কখনও আলু, পিঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আবার কখনও মিষ্টির বাক্সকে ‘ঢাল’ করে লকডাউন ভেঙে শহর ঘুরতে বের হচ্ছেন বাইক নিয়ে। এমন অভিযোগ উঠেছে পুলিশের পক্ষ থেকেই।
কখনও ভর দুপুরে আড়াইশো গ্রাম পিঁয়াজ হাতে কখনও বা সন্ধ্যেবেলা পাঁচশো আলু কিনতে লকডাউন ভেঙে বাইক নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছেন মানুষ। পুলিশ জিজ্ঞাসা করতেই তুরন্ত জবাব, প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে বাজারে এসেছি। কিন্তু পুলিশের পাল্টা প্রশ্নে থতমত খেয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। এক কিলো আলু বা পিঁয়াজ কিনতে কেন বাইক নিয়ে বের হওয়া? কেনই বা বাজারে যাওয়া, সেই উত্তর আর দিতে পারছেন না আরোহীরা। কেউ বা আবার চাঁদিফাটা রোদে ছোট্ট একটা মিষ্টির বাক্স নিয়ে পুলিশের সামনে তুলে ধরে বিনয়ের হাসি মুখে নিয়ে রাস্তায় হেঁটে চলেছেন। দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে মিষ্টি কেনার নাম করে বের হচ্ছেন অনেকেই। তবে যে দোকান থেকে মিষ্টি কেনার দাবি আর যেখান থেকে বাইক বা স্কুটার ধরা পড়েছে, তার মধ্যে কোনও সামঞ্জস্য পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জেরার পর কয়েকজন স্বীকারও করেছেন যে, তাঁরা শুধুই ঘুরতে অথবা কোনও বন্ধুর বাড়ি যাওয়ার জন্য বেরিয়েছেন। একইভাবে বড় রাস্তায় না হলেও বিভিন্ন এলাকার ভিতরের রাস্তাগুলিতে বহু এলাকার বাসিন্দাই ইচ্ছামতো লকডাউন ভেঙে বাইক নিয়ে ঘুরছেন, এমন অভিযোগও পুলিশের কাছে এসেছে। তবু অকারণে যাতে কেউ রাস্তায় ঘোরাঘুরি না করেন, তার জন্য পুলিশ কড়া হয়েছে। মঙ্গলবার লকডাউন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৬৬৯জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে ৯৮টি গাড়ি।
এদিকে, সারাদিন নাকা চেকিংয়ের পর যাতে পুলিশকর্মীরা খাবার পান, তার জন্য নাকাগুলিতেই মূলত যাচ্ছে লালবাজারের মোবাইল ক্যান্টিন। আপাতত ৬০ থেকে ৭০টি স্ন্যাকসের প্যাকেট বিকেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশকর্মীদের কাছে। ২০ টাকার এই প্যাকেটে থাকছে খাস্তা কচুরি, চানাচুরের মতো শুকনো খাবার, যা খেয়ে পেট ভরতে পারে একজনের। এ ছাড়াও থাকছে চা আর বিস্কুট। তার দাম পাঁচ টাকা। লকডাউনে খাবার ও চায়ের দোকান বন্ধ বলে রাস্তায় ডিউটিরত পুলিশকর্মীরা অপেক্ষা করে থাকছেন এই মোবাইল ক্যান্টিনের জন্য। চা ও খাবারের সঙ্গে থাকছে বোতলভর্তি মিনারেল ওয়াটার। যদিও জল বিনামূল্যেই দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.