ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘসূত্রিতার ফাঁসে বাদ যেতে চলেছে পা। বছর সাতাশের তরতাজা যুবককে হয়তো প্রতিবন্ধী হয়েই কাটাতে হবে বাকি জীবন। ছেলের এই পরিণতির জন্য রাজ্যের অন্যতম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমকেই কাঠগড়ায় তুললেন রোগীর পরিবার। ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে যুবকের পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যেই অভিযোগ পৌঁছেছে স্বাস্থ্য ভবনেও।
গত ১২ আগস্ট বাসের ধাক্কায় পায়ে গুরুতর আঘাত পান ভাঙড়ের বাসিন্দা বছর সাতাশের এনামুল মোল্লা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, সেখান থেকে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের তরফে জানানো হয়, পা বাঁচাতে দ্রুত প্লাস্টিক সার্জারির প্রয়োজন। চিকিৎসকরা জানান, ক্ষতবিক্ষত পা-কে পুনরায় আগের জায়গায় নিয়ে আসতে যে শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন তা এসএসকেএম হাসপাতালেই সম্ভব। তড়িঘড়ি ন্যাশনাল থেকে গুরুতর আহতকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএমে। আর এরপরই শুরু হয় হয়রানি।
অভিযোগ, হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও কোনও লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা বলেন, বেড খালি নেই। অস্ত্রোপচারের তারিখ নিয়েও সমস্যা দেখা দেয়। এরপর টানা বাহাত্তর ঘণ্টা হাসপাতালের এক ঘর থেকে আরেক ঘর। কিন্তু দরজায় দরজায় ঘুরেও কোনও সহযোগিতা মেলেনি। ভরতি নেওয়া হয়নি রোগীকে। বরং বলা হয়, আপাতত বিশ্রাম নিলেই পা ঠিক হয়ে যাবে। এই আশ্বাস দিয়ে কয়েকটি ওষুধও লিখে দেওয়া হয়। এনামুলের কথায়, “ওষুধ খেয়েও কোনও লাভ হয়নি। পায়ের ক্ষত ক্রমশ বাড়তে থাকে।”
অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৩ অগাস্ট মধ্যরাতে ফের এসএসকেএমের দ্বারস্থ হন রোগীর পরিবার। ততক্ষণে পচন ধরেছে রোগীর পায়ে। ছেয়ে গিয়েছে পোকা। রোগীর পরিবারের দাবি, হাসপাতালের তরফে জানানো হয় পা বাঁচানোর আর উপায় নেই। কেটে বাদ দেওয়াই এখন একমাত্র সমাধান। তারপরেও কেটে গিয়েছে আরও এক সপ্তাহ। হাসপাতালের বিছানায় একই অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এনামুল। হয়নি কোনওরকম ড্রেসিং। হাসপাতালে কোনও রকম চিকিৎসা না পেয়ে বাইরে থেকে লোক এনেই চলছে প্রাথমিক শুশ্রূষার কাজ। সব মিলিয়ে চিকিৎসার চরম অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁর পরিবার। মাত্র ২৭ বছর বয়সে পা কাটা পড়লে দিন গুজরান হবে কীভাবে এখন সেটাই ভাবছেন রোগীর পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.