সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরবঙ্গ থেকে এসে চার হাসপাতালে প্রত্যাখ্যাত হয়ে শেষ পর্যন্ত এক সরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়েও শেষরক্ষা হল না। রোগী মৃত্যুর নেপথ্যে বিনা চিকিৎসার অভিযোগ উঠল এসএসকেএমের (SSKM) বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে রীতিমতো হই-হট্টগোল শুরু হয়েছে নানা মহলে। প্রতিবাদে রোগীর মৃতদেহ নিতে নারাজ পরিবারের সদস্যরা। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
জানা গিয়েছে, গত ২২ তারিখ শিলিগুড়ির (Siliguri) বাসিন্দা রতনচন্দ্র শীল পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে আহত হন। উত্তরবঙ্গ থেকে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়। এখানে চারটি হাসপাতাল ঘুরতে হয় রতনবাবুকে। কোথাও মেলেনি চিকিৎসা পরিষেবা। শেষপর্যন্ত ২৭ তারিখ এসএসকেএমে তিনি ভরতি হন। কিন্তু অর্থোপেডিক বিভাগে বেড খালি না থাকায়, তাঁকে মেডিসিন বিভাগে ভরতি করানো হয়। কিন্তু সেদিন থেকে রতনবাবুর কোনও চিকিৎসাই হয়নি বলে অভিযোগ।রোগী যন্ত্রণায় কাতরালেও কেউ ফিরে তাকাননি তাঁর দিকে। বরং হাসপাতালে বাড়ির লোকেরাই তাঁর শুশ্রূষা করেছেন বলে দাবি তাঁদের। এরপর সোমবার সন্ধের দিকে মৃত্যু হয় রতন শীলের।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। রতন শীলের পরিবার সূত্রে খবর, দুর্ঘটনায় তিনি যেভাবে আহত হয়েছিলেন, তাতে খুব দ্রুত অপারেশন করা না হলে বিকলাঙ্গ হয়ে যেতে পারেন, এমন সতর্কবাণী শুনিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অস্ত্রোপচার দূরে থাক, কলকাতার এতগুলি হাসপাতাল ঘুরে ন্যূনতম চিকিৎসাটুকুই পাননি রতনবাবু। যার জেরে বিকলাঙ্গ হয়ে শরীরের কার্যকারিতা নয়, গোটা জীবনটাই থেমে গেল শিলিগুড়ির এই বাসিন্দার।
রোগী প্রত্যাখ্যান, বিনা চিকিৎসায় রোগীকে ফেলে রাখার মতো অভিযোগ বরাবরই রয়েছে সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোড়া থেকেই সরকারি হাসপাতালের বদনাম ঘুচিয়ে ফেলতে তৎপর। একাধিকবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বৈঠকে ডেকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসায় কী করতে হবে, কী করা যাবে না – স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে তার গাইডলাইনও প্রায় ঠিক করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো, চিকিৎসা পরিষেবায় উন্নতিও হয়েছে। কিন্তু তার ধারাবাহিকতা কোথায়? মাঝেমধ্যেই চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর ঘটনা সেই সংশয় উসকে দেয়। শিলিগুড়ির রতন শীলের মর্মান্তক পরিণতি আবারও প্রশ্ন তুলে দিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.