অভিরূপ দাস: ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস কলকাতা থেকে বাড়ি ফেরার কথা ছিল শনিবারই। পিসি পোশাক নিয়ে চলেও এসেছিলেন মল্লিকবাজারের নার্সিংহোমে। কিন্তু বাড়ি ফেরার দিনই অঘটন। কার্নিশ থেকে ঝাঁপ দিয়ে গুরুতর জখম বছর তেত্রিশের সুজিত অধিকারী। লেকটাউনের বাসিন্দা ওই যুবক বর্তমানে নার্সিংহোমের আইটিইউতে ভরতি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।
মৃগীর সমস্যায় নার্সিংহোমে ভরতি হন সুজিত। চিকিৎসক চিরঞ্জীব দাস এবং সিদ্ধার্থ আনন্দের অধীনে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন সুজিত কীভাবে কার্নিশে পৌঁছলেন, তা নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উঠেছে গাফিলতির অভিযোগও। সাংবাদিক বৈঠক করে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ওড়ালেন সিইও অভীক রায়চৌধুরী।
তিনি জানান, পেশায় লরিচালক সুজিতের অত্যধিক মাদকাসক্তি ছিল। শনিবার সকালে নার্সিং স্টাফ তাঁকে কার্নিশে যেতে দেখেন। বাধাও দেন। তিনি ওই নার্সিং স্টাফের হাতে কামড় দিয়ে কার্নিশে উঠে পড়েন। আর ঠিক এই সূত্র ধরে প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে জানলা খুলতে পারলেন ওই রোগী? সিইওর দাবি, স্ক্রু দিয়ে জানলা আটকানো ছিল। ওই স্ক্রু কোনওভাবে খোলেন। ভেঙে যাওয়া অংশও খুঁজে পায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। কোনও যন্ত্রের সাহায্য রোগী নিয়েছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুজিতকে কার্নিশে যেতে দেখেই তড়িঘড়ি দমকলে খবর দেওয়া হয়। রোগীকে নামাতে হাইড্রোলিক ল্যাডার নিয়ে নার্সিংহোম চত্বরে পৌঁছন দমকল কর্মীরা। খবর দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনকেও। তড়িঘড়ি ওই যুবকের পিসি এবং ভাই নার্সিংহোমে পৌঁছন। সিইওর দাবি, কার্নিশে বসে থাকাকালীন প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে পিসি এবং ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন সুজিত। সেই সময় পরিজনদের সঙ্গে মাত্র ১০ থেকে ১৫ ফুট দূরত্ব ছিল তাঁদের। বারবার খোঁজ নেন পুলিশ কিংবা সংবাদমাধ্যমের কেউ এসেছেন কি না।
এমনকী এদিন সকালেও সুজিত একেবারে স্বাভাবিক ছিলেন বলেই জানান সিইও। সুজিতের আর্থিক সমস্যা ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সিইও জানান, পেশায় লরিচালক সুজিতের মেডিক্লেম ছিল। নার্সিংহোমের বিলও মিটে গিয়েছিল। তাই আর্থিক কোনও সমস্যা ছিল না বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
মানসিক অবসাদ নাকি অন্য কোনও কারণ, কেন এমন অঘটন ঘটাল সুজিত। দুঃখজনক এই ঘটনা ঠিক কী কারণে ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। দমকল কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে স্বাস্থ্যভবনও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.