সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্নিশে উঠে টানা আড়াই ঘণ্টা ছিলেন। আর তারপর নিউরোসায়েন্সেস অফ কলকাতার ৮ তলার কার্নিশ থেকে কার্যত মরণঝাঁপ দেন রোগী। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে মল্লিকবাজারের নার্সিংহোমেই ভরতি করা হয়। মাথায়, বুকে, পায়ে গুরুতর চোট লাগা রোগী সুজিত অধিকারীকে ITU-তে রেখে চিকিৎসা করা হয়। তবে শত চেষ্টাতেও তাঁকে বাঁচানো গেল না। শনিবার সন্ধেবেলা তাঁর মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। এই ঘটনায় নার্সিংহোমের সামনে তুমুল বিক্ষোভও হয়। কর্তৃপক্ষ ও দমকলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
নার্সিংহোম সূত্রে খবর, সুজিত সরকার নামে ওই রোগী লেকটাউনের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার নার্সিংহোমে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। শনিবার ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাড়ে দশটা। আটতলার খোলা জানলা দিয়ে কার্নিশে চলে যান ওই রোগী। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে কার্নিশেই ছিলেন। কখনও উঠে দাঁড়িয়ে আবার কখনও হাঁটু মুড়ে বসে থাকতে দেখা যায় তাঁকে। কেউ সামনে আসলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিচ্ছিলেন যুবক।
সেই সময় দমকল হাইড্রোলিক ল্যাডার নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছয়। নিচে পাতা হয় ম্যাটও। ওই রোগীর আত্মীয়র মাধ্যমে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টাও করা হয়। হাইড্রোলিক ল্যাডারে তুলে রোগীর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয় মহিলা আত্মীয়কে। এমনকী কার্নিশ সংলগ্ন জানলাতেও নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।
তবে শেষরক্ষা হয়নি। আড়াই ঘণ্টা পর হাসপাতালের কার্নিশ থেকে ঝাঁপ দেন রোগী। খানিকক্ষণ কার্নিশ ধরে ঝুলতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে বেসামাল হয়ে পড়েন। একের পর এক কার্নিশ, দেওয়ালে ধাক্কা খেতে খেতে নিচে পড়ে যান। দমকলের পাতা ম্যাটের উপর পড়ে মাথা-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পান রোগী। রক্তাক্ত অবস্থায় তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে নার্সিংহোমের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অবশেষে মৃত্যু হয় বছর তেত্রিশের সুজিতের।
এদিকে, পুলিশ ও দমকল কর্মীদের চোখের সামনে ঘটা এই ঘটনার পরই নার্সিংহোমে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। কেন নিচে জালের বন্দোবস্ত না করে ম্যাট পাতা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও উঠেছে অভিযোগের আঙুল। যে ওয়ার্ড লাগোয়া কার্নিশে উঠে পড়েছিলেন রোগী, সেই জানলায় কেন গ্রিল ছিল না সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। এখনও পর্যন্ত নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.