অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হাসপাতালের শৌচগার থেকে রোগীর দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য। চাঞ্চল্য ছড়ালো হাওড়ার টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে। উদ্ধার হওয়া দেহটি সুখেন দাস ওরফে পচা নামে এক যুবকের। সোমবার থেকে তিনি ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওই হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, সোমবার তড়কা রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি হন সুখেনবাবু। তিনি বেলুড়ের রাজেন শেঠ লেনের বাসিন্দা। হাসপাতালের চারতলায় মেডিসিন ওয়ার্ডের পুরুষ বিভাগেই ছিলেন তিনি। দুপুরের দিকে একবার বাথরুমে যান। তারপর বেশ কয়েকঘণ্টা কেটে গেলেও তিনি আর নির্দিষ্ট বেডে ফেরেননি। এদিকে পুরুষ বিভাগে বেশ কয়েকটি শৌচাগার থাকায় বিষয়টি কারওরই নজরে আসেনি। সন্ধ্যাবেলা ওই বিভাগের এক রোগী দেখেন শৌচাগারের দরজা খুলছে না। ধাক্কাধাক্কি করেও কোনও ফল হয়নি। এরপর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীকে ঘটনাটি জানান তিনি। অভিযোগ, সেই কর্মীও রোগীর কথায় তেমন আমল দেননি। অন্যদিকে সুখেন দাস যে তাঁর বেডে নেই ততক্ষণে খেয়াল পড়েছে কর্তৃপক্ষের। তবে খোঁজখবর করার আগেই রোগী নিখোঁজ এমনটাই জানানো হয়েছে। খবর পেয়ে যুবকের পরিজনরা হাসপাতালে এসেছেন। এমতাবস্থায় শৌচাগারের দরজা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাননি ওই কর্মী।
বলা বাহুল্য, রাত বাড়লেও সংশ্লিষ্ট শৌচাগারের দরজাটি না খুলতেই টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। প্রথমে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা দরজা খোলার চেষ্টা করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এক পূর্ত দপ্তরের কর্মীকে ডেকে আনা হয়। শৌচাগারের দরজা ভাঙলে দেখা যায়, ভিতরে পড়ে আছে যুবকের দেহ। খোঁজখবর করতেই জানা যায়, মেডিসিনের পুরুষ বিভাগ থেকে নিখোঁজ হওয়া যুবকই শৌচাগারে আটকে ছিলেন। দেহটি তাঁর। এরপরেই হাসপাতাল চত্বরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই খবরে ভিড় করেন রোগীর আত্মীয়রা। মৃত যুবকের পরিজনরা গভীর রাতে দেহ আটকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান। পরে বেলুড় থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।
এদিন বেলা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি হাসপাতালের সুপার সুখেন্দু বিশ্বাস। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে জানান, ঘটনাটি তদন্তসাপেক্ষ। তাই এখনই কিছু বলা যাবে না। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.