ফাইল ছবি
সুব্রত বিশ্বাস: ট্রেনে চোর ধরা পড়লে তাকে কার হাতে তুলে দেবেন যাত্রীরা? গত বুধবার রাতে ১২৩৭৮ নিউ আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ (ডাউন) পদাতিক এক্সপ্রেসে বি-৩ কামরায় চোর ধরা পরার পর দেখা মেলেনি রেল পুলিশের (Rail Police)। যাত্রীরাই বেড রোলের চাদরে বেঁধে চোরকে মালদহ থেকে শিয়ালদহ নিয়ে আসেন। এরপরই যাত্রীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, যাত্রাপথের মাঝে বিপদ হলে দায় কার?
টিকিট পরীক্ষকদের একাংশের কথায়, চোরেরা কখনও একা ট্রেনে ওঠে না। এমনকি অসংরক্ষিত বা সংরক্ষিত কামরার টিকিট কেটে সাধারণত যাত্রী সেজে ওঠে। এক্ষেত্রেও গভীর রাতে সুযোগ বুঝে যাত্রীদের মূল্যবান সামগ্রী, মোবাইল, টাকা নিয়ে চম্পট দেওয়ার ছক ছিল। তারপর নির্দিষ্ট স্টেশন বা ট্রেনের গতি কম হলে নেমে পড়ত তারা।
২০২১ সালের ৩০ আগস্ট প্রায় একইভাবে ডাউন পদাতিক এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরায় একাধিক যাত্রীর মোবাইল চুরি হয়। যাত্রীরা পাকড়াও করে আল আমিন নামে এক যুবককে। তার কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছিল। পরে তাকে শিয়ালদহ জিআরপি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই একই বছর ২২ ডিসেম্বর অসম থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পেশ্যাল সিকিউরিটি গার্ডের এক আধিকারিক কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্রেনের চেপে ফিরছিলেন। অভিযোগ, ওই আধিকারিকের আগ্নেয়াস্ত্র চলন্ত ট্রেন থেকে চুরি যায়। পরে নিউ কোচবিহার জিআরপি তদন্ত নেমে অসমের কোকরাঝাড় থেকে তা উদ্ধার করে। ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর আপ পদাতিক এক্সপ্রেসে মালদহ- কিশানগঞ্জের মধ্যে দশটির বেশি মোবাইল ও ব্যাগ চুরি হয়েছিল।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ ডাউন দার্জিলিং মেলে শিয়ালদহ আসছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। বাতানুকূল দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা থেকে প্রাক্তন মন্ত্রীর ব্যাগ ও মোবাইল চুরি যায়। আরপিএফ ও জিআরপি ট্রেনে থাকার কথা থাকলেও দেখা মেলে না। রাতে পুলিশের দেখা মেলে না। প্রথম শ্রেণির বাতানাকুল কামরাতেও যাত্রীরা সুরক্ষিত নয়। রেল পুলিশের সঙ্গে চোরদের যোগাযোগ না থাকলে এ ভাবে চুরি সম্ভব নয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ। তাদের প্রশ্ন, ট্রেনে এসকর্ট থাকলেও তারা বেআইনিভাবে মাল তোলে। তাদের থেকে টাকা নিতে ব্যস্ত থাকে। যাত্রী নিরাপত্তা দেখার ফুরসৎ নেই তাদের বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.