ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: “দাদা সঠিক ভাড়া দিন, দয়া করে টিকিট নিন। টিকিট স্যানিটাইজ করা আছে,” আনলকের (Unlock) বাজারে যাত্রীদের কাছে করুন অর্তি বাসমালিকদের। বাসে লাগানো হচ্ছে পোস্টারও। যাতে পরিষ্কার লেখা থাকছে, সব টিকিট স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। তাই নিশ্চিন্তে তা হাতে নিতে পারেন। উদ্দেশ্য একটাই। এই পোস্টার দেখে যাত্রীরা যাতে ভাড়া দিয়ে অন্তত টিকিটটা নেন। আর টিকিট বিক্রির ন্যূনতম অংশ পান বাসমালিকরা।
রাজ্য সরকার রাস্তার কর, পারমিট ফি ছাড় দেওয়ায় কিছুটা অক্সিজেন পেয়েছেন বাসমালিকরা। কিন্তু নয়া সমস্যায় এখন জর্জরিত অধিকাংশই। বাসে যাত্রী হলেও আয়ের পরিমান দিন দিন কমছে। অধিকাংশ অফিস- কাছারিই খোলা থাকায় মানুষকে ঘর থেকে বেরোতেও হচ্ছে। আর তাঁরা বাসেও চড়ছেন। ফলে যাত্রী হচ্ছে ভালই। কিন্তু টিকিট বিক্রি থেকে আয় ঘরে আসছে না। কারণ, যাত্রীরা ভাড়া দিলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় কাগজের টিকিট নিতে চাইছেন না। টিকিট থেকে যাচ্ছে কন্ডাক্টরের ব্যাগেই। তিনি ফিরে গিয়ে মালিককে বলছেন, যে কটি টিকিট কাটা হয়েছে সেই ক’জনই বাসে উঠেছেন। বাকি যারা টিকিট নেননি তাদের টাকা ঢুকে যাচ্ছে ড্রাইভার এবং কন্ডাক্টরের পকেটে। ফলে বাস চালিয়ে আয় দেখছেন না মালিক। সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।
নিয়মমতো বেসরকারি বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টরদের কোনও নির্দিষ্ট বেতন থাকে না। টিকিট বিক্রির ওপর কমিশন পান তাঁরা। ড্রাইভার ১২ শতাংশ, দুই কন্ডাক্টর ছ’শতাংশ করে ১২ শতাংশ। সকালে বাস বের করার সময় যে পরিমান টিকিট নিয়ে বেরোন, রাতে বাস গ্যারেজে ঢোকানোর সময় আবার দেখে নেন কত টিকিট বিক্রি হয়েছে। সেই বিক্রি থেকেই কমিশন পান তাঁরা। কিন্ত করোনা আবহে সংক্রমণের ভয়ে টিকিট থেকে যাচ্ছে কন্ডাক্টরের ব্যাগেই। এমনকী অনেকে ১০ টাকার নোট দিয়ে খুচরো ফেরত পেলেও নিতে চাইছেন না। যাত্রীদের বক্তব্য, কন্ডাক্টর দিনভর বাসে থাকেন। নানা জায়গা থেকে আসা নানান যাত্রীদের সংস্পর্শে আসেন তাঁরা। ফলে তাঁরাও যে সংক্রমিত হচ্ছেন না তার গ্যারান্টি কোথায়! হয়তো তাঁরা উপসর্গহীন। তাই তাদের হাত থেকে টিকিট নেওয়াটা ঝুঁকির। আর তাতেই সমস্যা বেড়েছে মালিকদের। টিকিট বিক্রি দেখে তাঁরা যাত্রীসংখ্যা বুঝতে পারছেন না। সেই সমস্যা সমাধানেই এবার বাসে পোস্টার দিয়ে যাত্রীদের নির্দিষ্ট ভাড়ার টিকিট নিতে বলছেন মালিকরা। বাস মিনিবাস সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সংক্রমনের আশঙ্কায় বহু যাত্রীই ভাড়া দিয়েও টিকিট নিচ্ছেন না। ফলে মালিকরা বুঝতে পারছেন না ঠিক কত যাত্রী বাসে উঠছেন। তাই আমরা সব বাসে পোস্টার দিচ্ছি যাতে যে টিকিট স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। যাত্রীরা তা নিশ্চিন্তে নিতে পারেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.