ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: উপাদান পৃথক করে তবেই শিবির থেকে সংগৃহীত রক্ত পাঠাতে হবে ব্লাড ব্যাঙ্কে (Blood Bank)। সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক অথবা হাসপাতালে এভাবেই পাঠাতে হবে। স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে বারবার এই অনুরোধ করেও কাজ না হওয়ায় এবার নির্দেশিকা জারি করা হল। সব সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক ও হাসপাতালকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিবিরে রক্তদানের পর চারটি উপাদান পৃথক করে তা পাঠাতে হবে।
গত বছর দফায় দফায় জেলাগুলিকে এনিয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছিল রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরের (Health Department) তরফে। কিন্তু কাজ তেমন হয়নি। তাই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সংগৃহীত রক্তের উপাদান পৃথক করে পাঠানোর নিয়মটি বাধ্যতামূলক করা হল। এক ব্যাগ রক্তের মধ্যে চারটি উপাদান থাকে। প্লেটলেট, পিআরবিসি(ঘনরক্ত), এফএফপি (ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা) এবং ক্রায়ো।
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞদের অভিমত, রোগীর রক্তের দরকার মানে রক্তের (Blood) সব উপাদান সঞ্চালন করতে হবে এমনটা কখনওই নয়। যে উপাদন দরকার তাই সঞ্চালন করলেই রোগীর প্রাণ বাঁচে। সব উপাদান রোগীকে সঞ্চালন করলে উলটে হিতে বিপরীত হতে পারে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের (Kolkata Medical College) হেমাটোলজির বিভাগীয় অধ্যাপক ডা. বিপ্লবেন্দু তালুকদার উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীর প্রয়োজন পিআরবিসি (ঘনরক্ত)। সেই রোগীর অন্য উপাদান কোনও কাজেই লাগে না। আবার রক্তের মধ্যে থাকা ক্রায়ো এমন উপাদন যা কিনা হিমোফেলিয়া, ভিডব্লিউডি (রক্তের বিরল রোগ)-এর জন্য জীবনদায়ী। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রোগীকে বাকি তিনটি উপাদন সঞ্চালন করলে সেগুলি অহেতুক নষ্ট হয়। এমনকি রক্তসঞ্চালনের পর থ্যালাসেমিয়া রোগী অসুস্থও হতে পারে। তাই সব দিক বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, কলকাতার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ ছাড়াও রাজ্যের ৪০টি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্তের উপাদান পৃথক করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শিবিরে রক্তদানের পর নিকটবর্তী হাসপাতাল বা ব্লাড ব্যাঙ্কে সেগুলি ‘আনমার্কড’ চিহ্ন দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। রক্তে কোনও রোগের জীবাণু রয়েছে কী না তা নিয়মমাফিক পরীক্ষার পর চারটি উপাদান পৃথক করা হবে। সেগুলি পৃথক ব্লাড ব্যাগে রেখে উপাদানের নাম, এবং কবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে, সেই ট্যাগ দিয়ে এলাকার হাসপাতাল বা ব্লাড ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এলাকায় থ্যালাসেমিয়া ইউনিট থাকলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রোগীদের কার্ড মিলিয়ে পিআরবিসি পাঠানো হবে। তবে ক্রায়োর মতো অ্যান্টিজেন কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হবে বলেই স্টেট ব্লাড সেল সূত্রে খবর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.