দীপঙ্কর মণ্ডল: মহিলা শিক্ষিকাদের নিয়ে নিজের করা বক্তব্যে অনড় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষকদের সভামঞ্চে বদলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা স্ত্রী-রোগে ভুগছেন যে আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি।” শিক্ষামন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্যকে ‘অপমানজনক’ বলে দাবি করে শিক্ষিকারা নিন্দায় সরব হন। শুক্রবার নিজের ফেসবুক পোস্টে শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করা হয়েছে। আগের দিনের বক্তব্য নিয়ে তিনি এদিন দুঃখ প্রকাশ করেননি। উলটে বলেছেন, তাঁর বক্তব্য অপব্যাখ্যা হওয়ায় তিনি মর্মাহত। তিনি বলেন, “শিক্ষিকাদের সমস্যা জানাতে গিয়ে যদি কোনও অপব্যাখ্যা হয়ে থাকে তা কখনওই কাম্য নয়। আমি মহিলাদের সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তাতে যেভাবে তার অপব্যাখ্যা হচ্ছে তাতে মর্মাহত।”
তিনি বলেন, “শিক্ষিকাদের সমস্যা জানাতে গিয়ে যদি কোন অপব্যাখ্যা হয়ে থাকে তা কখনওই কাম্য নয়। আমি মহিলাদের সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তাতে যেভাবে তার অপব্যাখ্যা হচ্ছে তাতে মর্মাহত।”
নিজের ফেসবুক ওয়ালে পার্থবাবু পোস্ট করেন, ” গতকাল নজরুল মঞ্চে আমার দেওয়া বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করার একটা প্রবণতা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের সরকার নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে শিক্ষিকাদের দূর-দূরান্তে স্কুলে কাজ করাকে সঠিক বলে মনে করেনি সেই কারণেই শিক্ষিকাদের যতটা সম্ভব তাঁদের নিজেদের জেলাতেই যেখানে শিক্ষিকার বা শিক্ষকের দরকার সেখানেই তাঁদের রাখতে বলা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, “নিয়োগ করার সময় শিক্ষিকাদের নিজেদের জেলাতেই যতটা সম্ভব নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া আছে, বদলির সময় সেই নিয়ম যতটা সম্ভব মেনে চলতে বলা আছে। শিক্ষিকাদের সমস্যা জানাতে গিয়ে যদি কোন অপব্যাখ্যা হয়ে থাকে তা কখনওই কাম্য নয়। আমি তো নিজেই মহিলাদের সম্পর্কে ছোটবেলা থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তাতে যেভাবে তার অপব্যাখ্যা হচ্ছে তাতে আমি মর্মাহত। প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রত্যাশিত পে-গ্রেড নিয়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যে অনুমতি দিয়েছেন, সেই অনুমতি আগের আমলে দেওয়া হয়নি।
পার্থবাবুর দাবি, শিক্ষকদের নিয়োগ এবং তাদের বেতনবৃদ্ধি নিয়ে এই সরকার যা ব্যবস্থা করেছে, তা আগের সরকার করেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই সরকারকে উপযুক্ত সাধুবাদ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ” আমাদের সরকারই নন-ট্রেন্ড শিক্ষক সমাজকে নিজেরাই সুযোগ দিয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর যাদের নেই তাদেরকেও পরীক্ষার বন্দোবস্ত করে। ট্রেন্ড হবার ও ৫০ শতাংশ নম্বর যাতে তাঁরা পায় তার জন্য প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করেছে। অথচ আজকে যারা এ বিষয়ে মতপ্রকাশ করছেন তাদের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে না। সরকার সীমিত অর্থনৈতিক ক্ষমতার মধ্যেও গোটা শিক্ষক সমাজের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য থাকলে তারা বুঝবেন শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার্থে শুধু নয়, শিক্ষার পরিকাঠামোগত ও ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে এই সরকার কতটা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.