ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: হিন্দুত্বের তাসেই সরাসরি বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছে বিজেপি। বাঙালি মনীষীদের অসম্মানের অভিযোগ নিয়েও তির শানাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার (JP Nadda) সেই সমস্ত অভিযোগের পালটা জবাব দিতে গিয়ে তীব্র সমালোচনায় সরব হল তৃণমূল। রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর দিন রাজ্যে লকডাউনের সিদ্ধান্তকে ‘হিন্দুবিরোধী’ বলে তোপ দেগেছিলেন জে পি নাড্ডা। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) বক্তব্য, যারা বাংলা ভাষাকেই ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয় না, রবীন্দ্রনাথের নোবেল চুরির কিনারা করতে পারে না, তারা বাংলাকে কী করে বুঝবে? তাঁর কথায়, “রবীন্দ্রনাথের প্রতি ভক্তিই, দেশভক্তি সমস্তটাই এদের লোক দেখানো।”
সাংগঠনিক নীতি-নির্ধারণের মঞ্চ থেকে বৃহস্পতিবার নিজেদের সরকারকে গরিবের সরকার আখ্যা দিয়ে সরাসরি বাংলার সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের রাস্তা নেন নাড্ডা। যার প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূলের মহাসচিব বলেছেন, “এঁদের A থেকে Z, সব নেতাই একই ধরনের কথা বলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনীতিটা করেন, তা সবাইকে নিয়ে। বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক অধিকার তাকে সুরক্ষিত করার জন্য তিনি লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন।” তাঁর কথায়, “আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। মানুষকে উপেক্ষা করার রাজনীতি আমরা করি না।”
এদিন সরকারি সংস্থা বেসরকারিকরণের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেছেন, “যারা রেল থেকে ভেল বেচে দিচ্ছে, কয়লাখনি, বিমান বেসরকারি হাতে দিচ্ছে, তারা নিজেদের গরিবের সরকার বলছে কী করে? আমরা যদি পরনির্ভর হয়ে পড়ি, তবে ভারত আত্মনির্ভর হবে কী করে?” তাঁর কথায়, “এ রাজ্যের কতটুকু খবর ওঁরা রাখেন? বা ওনাকে কতটুকু খবর দেওয়া হয়? পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই সরকার সকলের সরকার, এই সরকার খেটে খাওয়া মানুষের সরকার, কৃষকের সরকার, যুব-ছাত্রের সরকার, সরকারি কর্মচারীদের সরকার, রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের সরকার।”
শান্তিনিকেতনে অশান্তি নিয়ে অভিযোগের জবাবেও পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের মহাসচিব। বলেছেন, “গুন্ডারাজ তো এতদিন পর্যন্ত হয়নি। নোবেল প্রাইজ চুরি হয়ে গিয়েছে। তার সুরাহা হয়নি। রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে না হয় নাই কথা বললেন।” বাংলাকে যাতে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয় তার জন্য রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে আবেদন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। সে কথা জানিয়ে এদিন বলেন, “বাংলা তো সরকারি ভাষা। তার পরেও তাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেবেন না বলছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে এর প্রতিবাদ আমি নিজে করেছি। বাংলা ভাষাকে তার সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.