ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ৬ দিন পর মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারিত পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। এবার শাসকদলের মহাসচিব, শৃঙ্খলা কমিটি-সহ সমস্ত পদ থেকেও তাঁকে সরানো হল। যতদিন তদন্ত চলবে, দলের তরফে তাঁকে সাসপেন্ড করা হল। নিজেকে তিনি নির্দোষ প্রমাণ করতে পারলে দল ফের সসম্মানে ফিরিয়ে নেবে তাঁকে। বৃহস্পতিবার তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা কথা জানালেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। পার্থবাবুর ফাঁকা পদে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৈরি হয় সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। রাজনৈতিক দলটির জন্মলগ্ন থেকে মহাসচিব পদে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উপর বেশ কিছু গুরুদায়িত্ব দিয়েছিলেন। এই পদ ছাড়াও ৪টি পদে ছিলেন পার্থবাবু। জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য, দলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদক, শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সদস্য, দলের জাতীয় সহ-সম্পাদক ছিলেন তিনি। সমস্ত পদ থেকে সত্তর বছরের তৃণমূল নেতাকে অপসারিত করা হল। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনি আপাতত ইডির হেফাজতে। তদন্তের স্বার্থে, জনতার কাজের স্বার্থে তাঁকে সেসব পদ থেকে সরানো হল বলে জানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
এর আগেও একবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসেছিল। তবে সেদিন জানানো হয়, দোষী সাব্যস্ত হলে পার্থবাবুর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। এখনও এসএসসি দুর্নীতি মামলা নিয়ে তদন্ত চলছে। কিন্তু দুর্নীতির এত বড় অভিযোগ সামনে আসার পর আর ঝুঁকি নেয়নি বাংলার শাসকদল। তাই এদিন শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে পার্থবাবুকে মহাসচিব পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিল দল। অভিষেক বলেন, ”মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নীতি, যদি দলের নামে কেউ জনতাকে বঞ্চিত করে নিজের স্বার্থ গুছিয়ে নিতে চায়, তাহলে কোনওভাবেই দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না। যাঁরা এর সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। পরের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করবেন দলের পরবর্তী মহাসচিব কে হবেন। ” এদিনের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও ছিলেন সুব্রত বক্সি, কুণাল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিম।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি এদিন ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এত কালো টাকা কোথা থেকে উদ্ধার হচ্ছে? উৎস কী? তাও ইডির তদন্ত করে দেখা উচিত বলে মনে করছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.