দীপঙ্কর মণ্ডল: ‘দুর্নীতি’র শাস্তি হিসাবে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর স্কুলের চাকরি এখন ইতিহাস। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁকে ৪১ মাসের বেতন ফেরত দিতে হবে। এসবের মধ্যে শুক্রবার জানা গেল স্কুল ছেড়ে কলেজে অধ্যাপনার দিকে পা বাড়াচ্ছেন অঙ্কিতা। নিউটাউনে কলেজ সার্ভিস কমিশনে ২৬ এপ্রিল ইন্টারভিউ ছিল তাঁর।
এসএসসি দুর্নীতি মামলার জল গড়িয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে মামলার তদন্ত করছে সিবিআই (CBI)। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী নিজাম প্যালেসে যান। দফায় দফায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা ‘বেআইনি’ভাবে চাকরি পেয়েছেন বলেই দাবি হাই কোর্টের। সেই মতো তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। দু’দফায় ৪১ মাসের প্রাপ্ত বেতন ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হওয়ার আবেদন করেছেন পরেশ অধিকারীর মেয়ে। কলেজ সার্ভিস কমিশনে (College Service Commission) ইন্টারভিউয়ের ডাকও পেয়েছিলেন। তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে তিনি ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলেন কিনা জানা নেই।
অন্যদিকে, স্কুল থেকে চাকরি চলে যাওয়া পরেশবাবুর মেয়ে অঙ্কিতা (Ankita Adhikari) ছাড়াও মন্ত্রীর কাছের-দূরের মিলিয়ে অন্তত ২৫ জন সরকারি চাকরি করেন! মন্ত্রীর ছেলে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক। স্ত্রী সরকারি চাকরি করেন। এছাড়াও পরেশবাবুর দুই বোন, দুই ভাগ্নে, ভাগ্নি, বউদি, চারজন ভাইপো, ভাইঝি, মামাতো ভাই, পিসতুতো ভাই, পিসতুতো ভাইয়ের দুই মেয়ে, দুই শ্যালক, এক শ্যালকের স্ত্রী, শ্যালিকা সবাই সরকারি চাকরি করেন। যা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে জোর আলোচনা।
সিবিআই সূত্রে খবর, পরেশ অধিকারীর আত্মীয়রা নিজেদের মেধায় নাকি প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতা কে করেছিল, তাও তদন্তসাপেক্ষ। সে সংক্রান্ত তথ্যের খোঁজেই পরেশকে বারবার জেরা করা হচ্ছে বলেই জানা গিয়েছে। আরও কোনও প্রভাবশালী এসএসসি দুর্নীতিতে (SSC Scam) জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.