সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অবাধ হিংসার অভিযোগে সরব বিরোধীরা। বস্তুত, ভোটের দিনই ১৬ জনের মৃত্যু এবং রাজ্যজুড়ে শয়ে শয়ে রাজনৈতিক কর্মীর জখম হওয়া, বিরোধীদের সেই অভিযোগকে কিছুটা হলেও মান্যতা দেয়। শাসক বলছে সামান্য কয়েকটি বুথে হিংসা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বাকি প্রায় ৬১ হাজার বুথে ভোট হয়েছে শান্তিপূর্ণ এবং উৎসবের মেজাজে। আর যেখানে হিংসা হয়েছে, সেখানে আক্রান্ত বেশিরভাগ তৃণমূলই (TMC)। বিরোধীরা হিংসার কারবার করছে।
বস্তুত, হিংসা যে হয়েছে সেটা অস্ফুটে হলেও মানছে শাসকদল। কিন্তু এখন প্রশ্ন হল, এই হিংসা কবলিত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল কী হতে পারে? আদৌ শাসকদের বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধ’ গড়তে পারল বিরোধীরা? নাকি ১৮-র মতোই অবাধে সব জেলা পরিষদ দখল করে নেবে তৃণমূল? এমনিতে পঞ্চায়েত (Panchayat Election 2023) স্তরের নির্বাচনে এক্সিট পোল সেভাবে করা যায় না। তবে এবার সি ভোটার একটি ভোট পরবর্তী সমীক্ষা করেছে। বিকেল ৪টে পর্যন্ত সেই সমীক্ষায় যা ফলাফল উঠে এল তার সারমর্ম হল, বেশিরভাগ জেলাতেই অনায়াসে জেলা পরিষদ দখল করার পথে তৃণমূল। শুধু কয়েকটি জেলায় বিরোধীরা খানিকটা লড়াইয়ে আছে।
সি ভোটারের সমীক্ষা বলছে, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলি, নদিয়া, বীরভূম, দুই বর্ধমানে অনায়াসে জেলা পরিষদ দখল করতে পারে তৃণমূল। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়াও অনায়াসে শাসকদলের দখলে যাচ্ছে। এই জেলাগুলিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকতে পারে বিজেপি (BJP)। বাম এবং কংগ্রেসের জোট থাকবে তৃতীয় স্থানে। আইএসএফ উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু আসনে লড়াই করার চেষ্টা করলেও ভোটের ফলে বিশেষ প্রভাব নাও ফেলতে পারে।
এ তো গেল শাসকদলের স্বস্তির খবর। এই সমীক্ষায় তৃণমূলের জন্য অস্বস্তির খবরও আছে। সি ভোটারের (C Voter) সমীক্ষা বলছে উত্তরবঙ্গের দুটি জেলা পরিষদ হাতছাড়া হতে পারে তৃণমূলের। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার দখল করতে পারে বিজেপি। কোচবিহারের ৩৪টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ১৮ থেকে ২২ আসন, আর তৃণমূলের দখলে যেতে পারে ১১ থেকে ১৭ আসন। আলিপুরদুয়ারের ১৮ আসনের মধ্যে বিজেপি পেতে পারে ১০ থেকে ১৪ আসন। এর বাইরে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই করছে দুটি জেলায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদ আসন ৭০টি। সেখানে সি ভোটারের এক্সিট পোল অনুযায়ী তৃণমূল পেতে পারে ৩৫-৪৫টি আসন। বিজেপির দখলে আসতে পারে ২৬-৩২টি আসন। বাম ও কংগ্রেসের ঝুলিতে আসতে পারে ০-২টি আসন। আর সুকান্ত মজুমদারের দক্ষিণ দিনাজপুরের ২১ আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে যেতে পারে ১১-১৫ আসন, সেখানে বিজেপি পেতে পারে ৬-১০ আসন।
বাম-কংগ্রেস (Congress) গোটা রাজ্যে আগের বারের তুলনায় বেশি প্রার্থী দিলেও সি ভোটারের এক্সিট পোল অনুযায়ী এই মুহূর্তে কোনও জেলা পরিষদ দখল করার জায়গায় নেই। তবে মুর্শিদাবাদ এবং মালদহে বাম-কংগ্রেস জোট শাসকদলকে কড়া টক্কর দিচ্ছে। মুর্শিদাবাদে জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ৭৮। সেখানে তৃণমূল পেতে পারে ৩৯-৪৯টি আসন। বিজেপি ০ থেকে ৪টি আাসন পেতে পারে। বাম-কংগ্রেসের ঝুলিতে ঢুকতে পারে ২৬-৩৬টি আাসন। অর্থাৎ এই জেলায় লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। একই ছবি মালদহে। গনিখানের জেলায় ৪৩ আসনের মধ্যে তৃণমূল পেতে পারে ১৮-২৬ আসন। সেখানে বাম-কংগ্রেস পেতে পারে ১৫-১৮ আসন। ৩-৭ আসন পেতে পারে বিজেপি। অর্থাৎ এই জেলাতেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.