অর্ণব আইচ: বিজেপির যুবনেত্রী পামেলা গোস্বামীর গ্রেপ্তারি ঘিরে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। গেরুয়া শিবিরেরই নেতা রাকেশ সিং তাঁকে ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন খোদ পামেলা। শনিবার আলিপুর আদালতে তোলার সময় সংবাদমাধ্যমের কাছে এই অভিযোগ করেছেন ধৃত বিজেপির যুবনেত্রী। প্রসঙ্গত, রাকেশ সিং কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
মাদক প্রচার মামলায় ধৃত পামেলাকে এদিন আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালতে তোলার আগে পামেলা সংবাদমাধ্যমকে জানান, “এটা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ রাকেশ সিংয়ের চক্রান্ত। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে। ওঁকে গ্রেপ্তার করা হোক।” পাশাপাশি, এই ঘটনার সিআইডি তদন্ত দাবি করেছেন পামেলা। যদিও বিজেপির যুবনেত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। তাঁর কথায়, “পুলিশ জোর করে আমার নাম বলিয়ে নিয়েছে।” এদিকে বিজেপির তরফে পামেলার মামলা লড়ছেন আইনজীবী শুভদীপ রায় এবং পৃথ্বীজয় দাস জানিয়েছেন, “এটা একেবারে ওঁর ব্যক্তিগত মতামত। তবে পামেলাকে আদালত তোলা নিয়ে লুকোচুরি চলছে। কখন কোন আদালতে তোলা হবে তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।”
উল্লেখ্য, এই মামলায় আরেক অভিযুক্ত প্রবীর দে বিরুদ্ধে গত বছরই লালবাজারে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পামেলার বাবা কৌশিক গোস্বামী। জানিয়েছিলেন. প্রবীর তাঁর মেয়েকে মাদক সেবনে বাধ্য করেছে। এমনকী, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পামেলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিল প্রবীর। বারবার বলা সত্ত্বেও বিয়ে করছিল না প্রবীর। তাঁর ফাঁদে পা দিয়ে গতবছর বাড়িও ছেড়েছিল পামেলা। এরপরই পুলিশকে চিঠি দিয়ে সবকথা জানান কৌশিকবাবু। পুলিশের ধারনা, সেই প্রবীরের ইন্ধনেই মাদক পাচার মামলায় নেমেছিল পামেলা। তবে এদিন এ বিষয়ে পামেলার মা মধুচ্ছন্দা গোস্বামী এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই অভিযোগ পাওয়ার পর থেকেই পামেলা এবং তার সঙ্গী প্রবীরের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। সেই সূত্র ধরেই মাদক পাচারের সময় তাদের হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশ। কলকাতায় কোকেন সহজলভ্য নয়। ডার্কওয়েব থেকে সেই মাদক সংগ্রহ করত প্রবীর ও পামেলা। যদিও পামেলার ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, গত ১০ দিন ধরেই তাঁদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছিল রাকেশ।
প্রসঙ্গত, নিউ আলিপুর (New Alipore) থেকে কয়েক লক্ষ টাকার কোকেন উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছেন বিজেপি যুব মোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামী ও তাঁর সঙ্গী প্রবীর দে। জানা গিয়েছে, নিউ আলিপুরে নিজের আবাসনের কাছে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য পামেলা যান। সেখানেই তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়। নিউ আলিপুর থানার পুলিশ তাঁর গাড়ি থেকে প্রায় ৯০ গ্রাম কোকেনের প্যাকেট পেয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। এদিন আদালত ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পামেলাকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এদিন আদালতে সরকারি আইনজীবীরা জানিয়েছেন, পামেলার কাছ থেকে দুটি মাদকের প্যাকেট মিলেছে। একটিতে ৩৬ গ্রাম ও অন্যটিতে ৪০ গ্রাম কোকেন ছিল।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.