বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: একের পর এক বিধায়ক দল ছাড়ছেন। অবিলম্বে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে সরকারকে আস্থা প্রমাণ করার দাবি জানালেন রাজ্যের বিরোধীরা। অন্যথায় নবান্ন অভিযানের হুঁশিয়ারিও দিল বাম, কংগ্রেস (Left-Congress)। নতুন ঘোষণা ও কেন্দ্রীয় কৃষি এবং শ্রমিক আইন নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভার অধিবেশন দাবি করে মুখ্যমন্ত্রীকে বৃহস্পতিবার চিঠি দেয় এই দুই দল।
বৃহস্পতিবার বামশাসিত রাজ্য কেরলে বিধানসভার অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধী আইন পাশ হয়েছে। আর এ রাজ্যে এই নিয়ে চতুর্থবার বিধানসভার অধিবেশন ডাকার দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়য় (CM Mamata Banerjee) চিঠি দিল কংগ্রেস ও বাম। দুই বিরোধী দলের অভিযোগ, করোনা আবহের মধ্যেই মানুষ স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্ঠা করছে। অফিস কাছারি, বাজার, হোটেল রেস্টুরেন্ট খোলা। অথচ রাজ্য সরকার বিধানসভার অধিবেশন বসাতে নারাজ। এইভাবে সরকার জনপ্রতিনিধিদের কন্ঠরোধ করার চেষ্ঠা করছে বলে অভিযোগ করেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান (Abdul Mannan)।
বিরোধী দলনেতার মতে, কৃষি আইনের প্রতিবাদে ও প্রত্যাহারের দাবিতে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে দিল্লিতে একমাস ধরে কৃষকরা বিক্ষোভ চালাচ্ছে। কেরল, পঞ্জাব, ছত্রিশগড় ও দিল্লির মতো রাজ্য বিধানসভায় কেন্দ্রীয় কৃষি বিলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। কোনও রাজ্য আবার পালটা আইন প্রণয়নও করছে। কিন্তু এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি কর্ণপাত করছেন না। এর ফলে জনপ্রতিনিধিদের সম্পর্কে মানুষের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) দাবি, অনেক রাজ্যই ধান-সহ কৃষিজাত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেঁধে দিয়েছে। এ রাজ্যে তা হয়নি। এখনই এই বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার লোকসভার অধিবেশন ডাকছে না। রাজ্যও সেইপথে হাঁটছে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। সুজন চক্রবর্তীর আরও কটাক্ষ, “শাসকদলে এখন দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। আগে অধিবেশন ডেকে নিজেদের আস্থা প্রমাণ করতে হবে সরকারকে।” আস্থা প্রমাণ করতে পারবে না বলেই সরকার অধিবেশন ডাকছে না বলে মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, সাংবিধানিক প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের উপর অবাঞ্ছিতভাবে হস্তক্ষেপ করছে। রাজ্যপালও রাজ্যের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। বিষয়গুলি নিয়ে অধিবেশনে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান বাম পরিষদীয় দলনেতা।
এছাড়া চলতি বছর বাজেটে বরাদ্দ নেই। অথচ ভোটের লক্ষ্যে একের পর এক প্রকল্প ঘোষণা করে রাজ্য সরকার মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে অভিযোগ করল কংগ্রেস ও বাম পরিষদীয় দল। অন্য রাজ্যে বিধানসভার অধিবেশন হলে কেন বাংলায় হবে না চিঠিতে সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.